আপনি কি জন্ম নিবন্ধন অনলাইন চেক করার নিয়ম সম্পর্কে জানতে ইচ্ছুক? যদি ইচ্ছুক হয়ে থাকেন তাহলে আমাদের এই পোস্টটি পড়ুন। কেননা আমরা আমাদের পোস্টের মধ্যে আমরা জন্ম নিবন্ধন অনলাইন চেক করার নিয়ম এবং জন্ম নিবন্ধন অনলাইন কপি ডাউনলোড করার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। সুতরাং, আর দেরি না করে দ্রুত এই পোস্টটি পড়ে নিয়ে জন্ম নিবন্ধন অনলাইন চেক করার নিয়ম এবং জন্ম নিবন্ধন অনলাইন কপি ডাউনলোড করার নিয়ম সম্পর্কে খুব ভালোভাবে জেনে নিন।
আমাদের এই পোস্টটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ার মাধ্যমে আপনি জন্ম নিবন্ধন সনদ সম্পর্কিত কিছু কমন প্রশ্নেরও উত্তর খুঁজে পাবেন। আর সেগুলো হলো- জন্ম নিবন্ধন অনলাইন কপি দেখতে চাই? জন্ম নিবন্ধন অনলাইন কিনা যাচাই? জন্ম নিবন্ধন অনলাইন কি ভাবে করব? জন্ম নিবন্ধন অনলাইন করতে কত টাকা লাগে? জন্ম নিবন্ধন অনলাইন করতে কি কি লাগে এবংজন্ম নিবন্ধন হারিয়ে গেলে করণীয় কি?
ভূমিকা
বর্তমানে বাংলাদেশের প্রতিটি নাগরিকের জন্য জন্ম নিবন্ধন সনদ তৈরি করা বাধ্যতামূলক হয়ে গেছে। আর এটা বাধ্যতামূলক হয়েছে মূলত ২০০৬ সালে কার্যকর হওয়া জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন আইন দ্বারা। এর পাশাপাশি বর্তমান ডিজিটাইজড যুগে জন্ম নিবন্ধন অনলাইন কপি থাকাটাও বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। কেননা যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে নিয়ে যেকোনো সরকারি কার্যক্রমের জন্য এখন আর পূর্বের হাতে লেখা জন্ম সনদ কপি কার্যকর হয় না। অর্থাৎ, বর্তমানে জন্ম নিবন্ধন সনদ সম্পর্কিত যেকোন তথ্য গ্রহণের জন্য শুধুমাত্র জন্ম নিবন্ধনের অনলাইন কপিকেই গ্রহণযোগ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।
যেহেতু পূর্বের সময়গুলোতে হাতে লিখে জন্ম নিবন্ধন সনদ তৈরি করা হতো এবং সেগুলো অনলাইন ডাটাবেজে সংরক্ষণ করা হতো না যার ফলে পূর্বের সেই জন্ম নিবন্ধন সনদের নাম্বার দিয়ে অনলাইন ডাটাবেজে সার্চ দিলেও কোন জন্ম সনদ শো করে না। আর এই বিষয়টির পরিণতিস্বরুপ আপনি যখনই কোন জাতীয় কাজ সম্পাদন করতে যাবেন যেমন- ট্রেড লাইসেন্স তৈরি করা, টিকার জন্য নিবন্ধন করা কিংবা পাসপোর্ট তৈরি করা এ সমস্ত কাজের জন্য আপনি চাইলেও পূর্বের সেই হাতে লিখা জন্ম সনদের জন্ম নিবন্ধন নাম্বর ব্যবহার করে উক্ত কার্যাবলি সম্পাদন করতে পারবেন না।
আরো পড়ুনঃ মোবাইল নাম্বার দিয়ে জাতীয় পরিচয় পত্র বের করা শিখে নিন
তবে এক্ষেত্রে একটি বিষয় উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, পূর্বের হাতে লেখা জন্ম সনদ গুলোর মধ্যে অনেকগুলো জন্ম সনদ বর্তমানে অনলাইন করার প্রক্রিয়া সম্পাদিত হয়েছে। অর্থাৎ, আগের দিনের হাতে লেখা জন্ম সনদ গুলোর মধ্যে কিছু কিছু জন্ম সনদ বর্তমানে অনলাইন করা সম্ভব হয়েছে আর কিছু কিছু অনলাইন করা আজ পর্যন্ত সম্ভব হয়নি।এখন প্রশ্ন হচ্ছে আপনার জন্ম নিবন্ধন পত্র আদৌও অনলাইন করা হয়েছে কিনা এই বিষয়টি আপনি কিভাবে বুঝবেন? এই বিষয়টি বোঝার জন্য মূলত আপনাকে জন্ম নিবন্ধন অনলাইন চেক করার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে হবে।
এখন হয়তো আপনিই দুশ্চিন্তায় পড়তে পারেন যে, কিভাবে আপনি জন্ম নিবন্ধন অনলাইন চেক করার নিয়ম সম্পর্কে জানবেন! তাহলে আপনাকে আমরা বলব দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই। কেননা আপনাদের সুবিধার্থে আজকে আমরা আমাদের এই পোস্টের মধ্যে জন্ম নিবন্ধন অনলাইন চেক করার নিয়ম সম্পর্কিত বিস্তারিত বিষয়াবলী সহজ এবং সাবলীল ভাষায় ধাপে ধাপে আলোচনা করেছি।
আর সেইসঙ্গে জন্ম নিবন্ধন অনলাইন চেক করার নিয়ম এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত পদক্ষেপ গুলোর পর্যায়ক্রমিক ছবিও আপনাদের সামনে উপস্থাপন করেছি। যাতে করে আপনাদের বুঝতে কোনো রকম অসুবিধা না হয়।তাহলে চলুন আর কথা না বাড়িয়ে জন্ম নিবন্ধন অনলাইন চেক করার নিয়ম সম্পর্কে জেনে নেই।
জন্ম নিবন্ধন অনলাইন চেক করার নিয়ম
আপনার জন্ম নিবন্ধন সনদ অনলাইন করা আছে কিনা এ বিষয়টি চেক করার জন্য আপনার প্রধানত দুইটি তথ্যের প্রয়োজন। আর এগুলো হলোঃ
- জন্ম নিবন্ধন সনদের ১৭ ডিজিটের জন্ম নিবন্ধন নাম্বর এবং
- জন্ম নিবন্ধন সনদে উল্লেখিত আপনার জন্ম তারিখ, মাস ও বছর।
আপনি যখন আপনার জন্ম নিবন্ধনের অনলাইন কপি চেক করার জন্য কাজ শুরু করবেন তার পূর্বে উপরিউক্ত এই দুইটি তথ্য সংগ্রহ করার পর কাজ শুরু করবেন। কেননা এই দুটি তথ্য ছাড়া আপনি কখনোই আপনার জন্ম নিবন্ধন সনদের অনলাইন কপি চেক করতে পারবেন না। এবার আপনার জন্ম নিবন্ধন সনদের জন্ম নিবন্ধন নাম্বর এবং জন্ম নিবন্ধন সনদ উল্লেখিত আপনার জন্ম তারিখ, মাস এবং সাল সংগ্রহ করার পর জন্ম নিবন্ধন অনলাইন চেক করার নিয়ম গুলোর পর্যায়ক্রমিক ধাপ জানার জন্য আপনি নিম্নলিখিত ধাপ গুলো ভালোভাবে পড়ে নিন।
জন্ম নিবন্ধন অনলাইন চেক করার নিয়মঃ ধাপ-০১
অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন কপি চেক করার কাজটি মোটেও কোন জটিল কাজ নয়। এটি অত্যন্ত সহজ একটি কাজ। আপনার জন্ম নিবন্ধন সনদের অনলাইন কপি চেক করার জন্য প্রথমেই আপনাকে “online BRIS” এর ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হবে। আপনি সরাসরি “online BRIS” এর ওয়েবসাইটে প্রবেশ করার জন্য এই লিংকে উপর চাপ দিয়ে প্রবেশ করতে পারবেন।
এরপর যখন আপনি এই লিংকের মধ্যে প্রবেশ করবেন তখন আপনার সামনে নিচের ছবির মত একটি ইন্টারফেস চলে আসবে। সেখান থেকে প্রথমের ফাঁকা ঘরটিতে আপনাকে আপনার ১৭ ডিজিটের জন্ম নিবন্ধন নাম্বর বসাতে হবে। ঠিক যেমনভাবে নিম্নের ছবিতে বসানো রয়েছে।
জন্ম নিবন্ধন অনলাইন চেক করার নিয়মঃ ধাপ-০২
এরপর দ্বিতীয় ফাঁকা ঘরটিতে আপনাকে আপনার জন্ম নিবন্ধন সনদের উল্লেখিত জন্ম তারিখ বসাতে হবে। জন্ম তারিখ লেখার ক্ষেত্রে আপনি অবশ্যই প্রথমে বছর এরপর মাস এবং তারপরে দিন লিখবেন আরেকটি বিষয় খেয়াল করলে দেখতে পাবেন যে, আপনি যখন এই দ্বিতীয় ফাঁকা ঘরটিতে আপনার জন্ম তারিখ লেখার জন্য ক্লিক করবেন তখন আপনার সামনে একটি ক্যালেন্ডার শো করবে আপনি চাইলে টাইপ করেও আপনার জন্ম নিবন্ধন সনদ অনুযায়ী জন্ম তারিখ লিখতে পারেন অথবা এই ক্যালেন্ডার থেকে বছর, মাস এবং দিন সিলেক্ট করেও ঘরটি পূরণ করতে পারেন।
জন্ম নিবন্ধন অনলাইন চেক করার নিয়মঃ ধাপ-০৩
উপরিউক্ত দ্বিতীয় ধাপটি সম্পন্ন হয়ে গেলে আপনি তৃতীয় ফাঁকা ঘরটি পূরণ করবেন। এর জন্য নিম্নের ছবিতে যেভাবে উল্লেখ করা হয়েছে সেই ভাবে আপনার সামনে আসা ক্যাপচাটির সঠিক সমাধান করে প্রাপ্ত ফলাফল দ্বারা ফাঁকা ঘরটি পূরণ করে দিবেন।
জন্ম নিবন্ধন অনলাইন চেক করার নিয়মঃ ধাপ-০৪
এবার সবশেষে জন্ম নিবন্ধনের অনলাইন কপি চেক করার জন্য নিম্নের ছবিতে উল্লেখিত নিয়ম অনুযায়ী সার্চ অপশনে ক্লিক করবেন।
জন্ম নিবন্ধন অনলাইন চেক করার নিয়মঃ ধাপ-০৫
সার্চ অপশনে ক্লিক করার পর আপনার সামনে আপনার জন্ম নিবন্ধন পত্রের অনলাইন কপিটি চলে আসবে। যেমনটা নিম্নের ছবিতে দেখানো হয়েছে। কিন্তু যদি আপনার জন্ম নিবন্ধন সনদ অনলাইন করা না থাকে সেক্ষেত্রে আপনার সামনে এই ধরনের কোনো ইন্টারফেস আসবে না। তখন আপনার সামনে যে ফলাফলটি শো করবে সেখানে “No Record Found” অথবা “error” লেখা থাকতে পারে।
প্রিয় পাঠক উপরিউক্ত ধাপগুলোই হলো জন্ম নিবন্ধন অনলাইন চেক করার নিয়ম সমূহের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত প্রধান ধাপ। আশা করছি উপরোক্ত ধাপগুলো ফলো করে আপনি খুব সহজেই আপনার জন্ম নিবন্ধনের অনলাইন কপি চেক করতে সক্ষম হবেন। এবার চলুন জন্ম নিবন্ধন অনলাইন কপি ডাউনলোড করার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেই।
জন্ম নিবন্ধন অনলাইন কপি ডাউনলোড করার নিয়ম
জন্ম নিবন্ধন অনলাইন কপি ডাউনলোড করার জন্য অবশ্যই আপনার জন্ম নিবন্ধন সনদটির অনলাইন কপি থাকতে হবে। যদি আপনার জন্ম নিবন্ধন সনদের অনলাইন কপি না থেকে থাকে তবে সেক্ষেত্রে আপনি কখনোই আপনার জন্ম নিবন্ধন সনদ অনলাইন কপি ডাউনলোড করতে পারবেন না।জন্ম নিবন্ধন অনলাইন কপি ডাউনলোড করার জন্য প্রথমেই জন্ম নিবন্ধন অনলাইন চেক করার নিয়ম সমূহের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত উপরিউক্ত ধাপগুলো সম্পন্ন করার পর আপনি আপনার কিবোর্ড থেকে একসঙ্গে (Ctrl+P) চাপ দিবেন।
আরো পড়ুনঃ ভিসা কিভাবে করতে হয়- ভিসা করতে কি কি লাগে-ভিসা করতে কত টাকা লাগে জেনে নিন
তাহলে আপনার সামনের নিচের ছবির মত একটি ইন্টারফেস চলে আসবে। আর এখন যদি আপনি সরাসরি আপনার জন্ম নিবন্ধন সনদের এই অনলাইন কপিটি প্রিন্ট করে নিতে চান সেক্ষেত্রে আপনাকে নিচের ছবির মত প্রিন্ট অপশনে ক্লিক করে প্রিন্ট করে নিতে হবে। অথবা আপনি যদি জন্ম নিবন্ধন সনদের পিডিএফ ফাইল ডাউনলোড করতে চান তবে সেক্ষেত্রে ডেস্টিনেশন (Destination) সেকশনের মধ্যে ড্রপডাউন আইকনে ক্লিক করে সেখান থেকে থেকে সেভ এজ পিডিএফ (Save as PDF) অপশনটি সিলেক্ট করে নিতে হবে।
এরপর পিডিএফ ফাইলটি সেভ করার জন্য নিচের সেভ (save) বাটনে ক্লিক করলেই উক্ত জন্ম নিবন্ধন সনদের পিডিএফ ফাইলটি ডাউনলোড হওয়া শুরু করবে এবং মাত্র কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই জন্ম নিবন্ধন সনদের অনলাইন কপিটি ডাউনলোড সম্পন্ন হয়ে যাবে।
উপরিউক্ত ধাপগুলি সফলভাবে শেষ করার মাধ্যমে জন্ম নিবন্ধন অনলাইন কপি ডাউনলোড করার নিয়ম সমূহের অন্তর্ভুক্ত ধাপগুলো কার্যকরীভাবে সম্পন্ন হয়ে যাবে। আশা করছি আমাদের এই পোস্টের উপরিউক্ত আলোচনার মাধ্যমে আপনি জন্ম নিবন্ধন অনলাইন কপি ডাউনলোড করার নিয়ম সম্পর্কে খুব ভালোভাবে জানতে পেরেছেন।
জন্ম নিবন্ধন সম্পর্কিত কিছু সাধারণ প্রশ্নাবলী
যেহেতু প্রতিটি মানুষের জন্যই জন্ম নিবন্ধন সনদপত্র একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট। তাই এই গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্টকে ঘিরে সাধারণ মানুষের মধ্যে কিছু কমন প্রশ্ন প্রতিনিয়ত ঘুরপাক খায়। আর এই প্রশ্নগুলোর সঠিক ব্যাখ্যা সহ উত্তর জানার জন্য তারা ইন্টারনেটের বিভিন্ন প্লাটফর্মে গিয়ে সার্চ করে থাকে। তাই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, আমাদের এই পোস্টের মধ্যে আমরা জন্ম নিবন্ধন সনদ সম্পর্কিত সাধারণ মানুষের কিছু কমন প্রশ্ন উত্তর দেয়ার চেষ্টা করব।
আর এই প্রশ্নগুলো হলো- জন্ম নিবন্ধন অনলাইন কপি দেখতে চাই? জন্ম নিবন্ধন অনলাইন কিনা যাচাই? জন্ম নিবন্ধন অনলাইন কি ভাবে করব? জন্ম নিবন্ধন অনলাইন করতে কত টাকা লাগে? জন্ম নিবন্ধন অনলাইন করতে কি কি লাগে? এবং জন্ম নিবন্ধন হারিয়ে গেলে করণীয় কি? সুতরাং, আপনিও যদি এই সমস্ত প্রশ্ন গুলোর সঠিক উত্তর জানতে চান তাহলে আমাদের এই পোস্টের নিম্নের অংশের আলোচনা গুলো খুব মনযোগ সহকারে পড়ে নিন।
জন্ম নিবন্ধন অনলাইন কপি দেখতে চাই । জন্ম নিবন্ধন অনলাইন কিনা যাচাই
আপনারা যারা জন্ম নিবন্ধন সনদের অনলাইন কপি দেখার জন্য গুগলের সার্চ বারে জন্ম নিবন্ধন অনলাইন কপি দেখতে চাই বা জন্ম নিবন্ধন অনলাইন কিনা যাচাই ইত্যাদি সার্চ টাইটেল দিয়ে সার্চ করে থাকেন তাদের উদ্দেশ্যে আমরা বলবো যে, আপনি আপনার জন্ম নিবন্ধন সনদের অনলাইন কপি দেখার জন্য আমাদের এই পোস্টের উপরের অংশে উল্লেখিত জন্ম নিবন্ধন অনলাইন চেক করার নিয়ম সম্পর্কিত ধাপগুলো যথাযথভাবে অনুসরণ করার মাধ্যমে খুব সহজেই আপনার জন্ম নিবন্ধন সনদের অনলাইন কপিটি দেখতে পারবেন।
জন্ম নিবন্ধন অনলাইন কি ভাবে করব
আপনার জন্ম নিবন্ধন সনদটি যদি পূর্বের জন্ম নিবন্ধন সনদের মতো হাতে লিখা জন্ম নিবন্ধন সনদ হয় তবে সেক্ষেত্রে আপনার উক্ত জন্ম নিবন্ধন সনদটি অনলাইন কিভাবে করবেন এই বিষয়টি জানার জন্য আপনি যদি প্রশ্ন করে থাকেন যে, আমার জন্ম নিবন্ধন অনলাইন কি ভাবে করব? তাহলে আপনার প্রশ্নের উত্তরে আমরা আপনাকে বলব আপনার জন্ম নিবন্ধন সনদ অনলাইন করার জন্য আপনাকে “bdris” এর ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে নতুন ভাবে জন্ম নিবন্ধন সনদ তৈরি করার জন্য আবেদন করতে হবে। আর আবেদন করার জন্য আপনি “bdris” এর ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে এই লিঙ্কের উপর চাপ দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে।
জন্ম নিবন্ধন অনলাইন করতে কত টাকা লাগে
আপনার যদি পুরাতন হাতে লেখা জন্ম সনদপত্র থাকে তবে সেক্ষেত্রে জন্ম নিবন্ধন অনলাইন করতে কত টাকা লাগে এই প্রসঙ্গে বলতে গেলে বলতে হয় যে, পুরাতন হাতে লেখা জন্ম সনদ অনলাইন করতে নিলে ১০০ টাকা নিবন্ধন ফি হিসেবে প্রয়োজন হয়। তবে যদি আপনি এই কাজটি বাইরের কোন কম্পিউটারের দোকান থেকে করে নিতে চান তাহলে তারা তাদের সার্ভিস ফি হিসেবে অতিরিক্ত ৫০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত চার্জ নিতে পারে।
এছাড়াও অন্যান্য প্রেক্ষাপটে জন্ম নিবন্ধন সনদ অনলাইন করতে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক প্রকাশিত জন্ম নিবন্ধন ফি সম্পর্কিত গেজেটের দ্বারা প্রকাশিত জন্ম নিবন্ধন সনদের নিবন্ধন ফি হলো নিম্নরূপঃ
- জন্মের ৪৫ দিন পর্যন্ত – কোনো ফি প্রযোজ্য নয়।
- জন্মের ৪৫ থেকে ৫ বছর পর্যন্ত- ২৫ টাকা।
- জন্মের ৫ বছরের বেশি হলে- ৫০ টাকা।
- জন্ম তারিখ সংশোধন ফি- ১০০ টাকা।
- নাম, পিতা-মাতার নাম, ঠিকানা ও অন্যান্য তথ্য সংশোধন ফি- ৫০ টাকা।
- তথ্য সংশোধনের পর বাংলা ও ইংরেজিতে জন্ম নিবন্ধন সনদের কপি- কোনো ফি প্রযোজ্য নয়।
- বাংলা ও ইংরেজিতে জন্ম নিবন্ধন সনদের কপি- ৫০ টাকা।
জন্ম নিবন্ধন অনলাইন করতে কি কি লাগে
জন্ম নিবন্ধন অনলাইন করতে কি কি লাগে এই বিষয়টিকে মূলত বয়স অনুযায়ী ৩ ভাগে ভাগ করা যায়।আর এই ৩টি ভাগের জন্য আলাদা আলাদা কাগজপত্রের প্রয়োজন হয়। চলুন জেনে নেওয়া যাক এই সমস্ত কাগজপত্র গুলো আসলে কি কি।
বয়স ০ থেকে ৪৫ দিন পর্যন্ত হলে
- শিশুর পিতা-মাতার ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি অথবা পিতা-মাতার অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদের ফটোকপি (বাংলা ও ইংরেজি)।
- শিশুর জন্মের পর যেই চিকিৎসাকেন্দ্রে শিশুর জন্ম হয়েছে সেই চিকিৎসা কেন্দ্রের ছাড়পত্র বা উক্ত চিকিৎসা কেন্দ্র হতেপ্রাপ্ত জন্ম সংক্রান্ত সনদের সত্যায়িত অনুলিপি।
- শিশুর বাবা-মায়ের বাসস্থানের হোল্ডিং ট্যাক্স পরিশোধের রশিদের ফটোকপি অথবা ইউ.পি ট্যাক্স পরিশোধের রশিদের ফটোকপি।
- শিশুর ১ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি।
বয়স ৪৫ থেকে ৫ বছর পর্যন্ত হলে
- টিকা কার্ডের (ইপিআই কার্ডের) সত্যায়িত ফটোকপি অথবা ইপিআই কর্মীর প্রত্যয়নপত্র।
- শিশুর বাবা-মায়ের বাসস্থানের হোল্ডিং ট্যাক্স পরিশোধের রশিদের ফটোকপি অথবা ইউ.পি ট্যাক্স পরিশোধের রশিদের ফটোকপি।
- শিশুর পিতা-মাতার ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি অথবা পিতা-মাতার অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদের ফটোকপি (বাংলা ও ইংরেজি)।
- শিশুর ১ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি।
বয়স ৫ বছরের বেশি হলে
- আবেদনকারীর চিকিৎসক কর্তৃক প্রদত্ত প্রত্যয়নপত্র, অথবা শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদপত্রের ফটোকপি। যেমনঃ পি.এস.সি পরীক্ষার সনদ জে.এস.সি পরীক্ষার সনদ এস.এস.সি পরীক্ষার সনদ।
- আবেদনকারীর বাবা-মায়ের বাসস্থানের হোল্ডিং ট্যাক্স পরিশোধের রশিদের ফটোকপি অথবা ইউ.পি ট্যাক্স পরিশোধের রশিদের ফটোকপি।
- আবেদনকারীর পিতা-মাতার ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি অথবা পিতা-মাতার অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদের ফটোকপি (বাংলা ও ইংরেজি)।
- আবেদনকারীর ১ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি।
জন্ম নিবন্ধন হারিয়ে গেলে করণীয় কি
আপনার জন্ম নিবন্ধন সনদ হারিয়ে যাওয়ার পরেও আপনার যদি জন্ম নিবন্ধন নাম্বর এবং জন্ম তারিখ মনে থাকে তবে এই দুইটি তথ্য দিয়েই আপনি অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন সনদ পুনঃর্মুদ্রণের জন্য আবেদন করতে পারবেন। এরপর পুনঃর্মুদ্রণের আবেদনের অনলাইন কপি আপনার এলাকার ইউনিয়ন পরিষদ কিংবা পৌরসভা কিংবা সিটি কর্পোরেশনের কার্যালয়ে গিয়ে আপনাকে জমা দিতে হবে।
কিন্তু যদি জন্ম নিবন্ধন পত্র হারিয়ে যাওয়ার পর আপনার জন্ম নিবন্ধন নাম্বর এবং জন্ম তারিখ মনে না থাকে তবে সেক্ষেত্রে আপনাকে আপনার এলাকার নিবন্ধকের কার্যালয়ে গিয়ে যোগাযোগ করতে হবে। যেখান থেকে আপনি মূলত আপনার হারিয়ে যাওয়া জন্ম নিবন্ধন সনদটির নিবন্ধন সম্পন্ন করেছিলেন। এরপর নিবন্ধন কার্যালয়ের কর্মকর্তারা আপনার নাম ও পিতা-মাতার নাম দিয়ে সার্চ করে আপনার জন্ম নিবন্ধনের তথ্যাবলী বের করে দিতে পারবে।
আরো পড়ুনঃ থাইরয়েড টেস্ট কি। থাইরয়েড টেস্ট কিভাবে করে । থাইরয়েড টেস্ট খরচ কত জেনে নিন
তবে আপনি এই কাজটি করার সময় যদি আপনার পিতা-মাতার জন্ম নিবন্ধন সনদের ফটোকপি সঙ্গে নিয়ে যান তবে আপনার জন্ম নিবন্ধন সনদের তথ্য খুঁজে পাওয়া খুব সহজ হয়ে যাবে। আশা করছি এতক্ষণে নিশ্চয়ই আপনি বুঝতে পেরেছেন যে, জন্ম নিবন্ধন হারিয়ে গেলে করণীয় সমূহ কি।
শেষ কথা
সম্মানিত পাঠক আমরা আমাদের আজকের পোস্টে জন্ম নিবন্ধন অনলাইন চেক করার নিয়ম, জন্ম নিবন্ধন অনলাইন কপি ডাউনলোড করার নিয়ম এবং জন্ম নিবন্ধন সনদ সম্পর্কিত সাধারণ জনগণের কিছু কমন প্রশ্নের যথাযথ উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করেছি। আশা করছি এই পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়ার মাধ্যমে আপনি জন্ম নিবন্ধন অনলাইন চেক করার নিয়ম এবং জন্ম নিবন্ধন অনলাইন কপি ডাউনলোড করার নিয়ম সম্পর্কিত যাবতীয় বিষয় সম্পর্কে খুব ভালোভাবে জেনে গেছেন।
তারপরেও যদি জন্ম নিবন্ধন সম্পর্কিত আপনার কোন সাধারণ জিজ্ঞাসা থেকে থাকে তবে অবশ্যই আমাদেরকে কমেন্ট করে জানাবেন। তাহলে আপনার এবং আপনার পরিবারের সুস্থতা কামনা করে আমাদের আজকের আলোচনা এখানেই শেষ করছি। ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। ধন্যবাদ।