অফিসিয়াল কাজে কম্পিউটারের ব্যবহার
আমাদের দেশে কম্পিউটার মুলত ওয়ার্ড প্রসেসিং বা লেখা-লেখির কাজে অফিস আদালতে টাইপ রাইটারের বিকল্প হিসেবে ব্যবহৃত হয়। বর্তমান সময়ে অফিসের যাবতীয় ব্যবস্থাপনার কাজে কম্পিউটারের ব্যবহার ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। যেমনঃ অফিসের কাজ বন্টন, বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ, চিঠিপত্র লেখা, রেকর্ড সংরক্ষণ, ফাইল রক্ষণাবেক্ষণ, দৈনিক আয়-ব্যয়ের হিসাব-নিকাশ ইত্যাদি কাজ কম্পিউটার দ্বারা খুব সহজে করা যায়।
ব্যাংকিংয়ের কাজে কম্পিউটারের ব্যবহার
আধুনিক বিশ্বে এমন কোন ব্যাংক নাই যেটা কম্পিউটার দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয় না। এক কথায় চেকের হিসাব , ক্রেডিট ও ডেবিটের হিসাব ইত্যাদি ব্যাংকের সকল কার্যক্রম কম্পিউটার দ্বারা পরিচালনা করা হয়ে থাকে। যার ফলে গ্রাহকদের চেক জমা দিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা টাকা পাওয়ার অপেক্ষায় বসে থাকার প্রয়োজন হয় না। এছাড়াও কম্পিউটার ব্যবহরের মাধ্যমে ব্যাংক পরিচালনার ফলে একদিকে গ্রাহকগণ যেমন দ্রুত সেবা পাচ্ছেন তেমনি ব্যাংকের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা কাজের চাপ থেকে মুক্তি পাচ্ছেন। বর্তমানে কম্পিউটার নেটওয়ার্কের মাধ্যমে প্রতিটি ব্যাংকের হিসাব দ্রুততম সময়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে জানানো সম্ভব হচ্ছে।
চিকিৎসাবিজ্ঞানে কম্পিউটারের ব্যবহার
চিকিৎসার কাজে কম্পিউটার ব্যবহারের ফলে অভুতপূর্ব উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। যেমনঃ প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষা, দৃষ্টিশক্তি পরীক্ষা, ক্যান্সার রোগ নির্ণয়, টিউমারের গঠন ইত্যাদি পরীক্ষায় কম্পিউটার দ্রুত ফলাফল প্রদান করছে। এর পাশাপাশি কম্পিউটারের মাধ্যমে বিভিন্ন রোগের ঔষধ নির্ধারণ এবং ঔষধের মান নিয়ন্ত্রন করা হচ্ছে।
ব্যবসায় বাণিজ্যের কাজে
ব্যবসায়-বাণিজ্যের কাজে কম্পিউটারের ব্যবহার অপরিসীম। যেমন: ফান্ড ট্রান্সফার, ব্যালেন্স সীট, হিসাবরক্ষণ, পে-রোল, আয়-ব্যয় হিসাব ইত্যাদি কম্পিউটার দ্বারা দ্রুত করা সম্ভব।
কল-কারখানার কাজে
কল-কারখানার যাবতীয় কাঁচামাল আমদানির হিসাব, রপ্তানি দ্রব্যের হিসাব, কর্মকর্তা ও শ্রমিক সংখ্যার হিসাব, শ্রমিক কর্মচারীদের মাসিক বেতনের হিসাব,বার্ষিক রিপোর্ট তৈরি ও বার্ষিক বাজেট তৈরি প্রভৃতি কাজ কম্পিউটার দ্বারা করা হয়ে থাকে।
প্রকাশনার কাজে কম্পিউটারের ব্যবহার
প্রকাশনার কাজে ও কমপিউটারের ব্যবহার উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। যেমন: কম্পিউটার দিয়ে দ্রুত গ্রফিক্স ডিজাইন, মুদ্রণ, গবেষণা রিপোর্ট, বই,চিঠিপত্র ইত্যাদি প্রকাশিত করা হয়। যখন প্রাকশনের কাজে কম্পিউটারের ব্যবহার ছিল না, তখন বই প্রকাশ করা খুবই কঠিন ছিল এবং তাতে প্রচুর সময় ও অর্থ ব্যয় করা লাগতো।
সংবাদপত্র প্রকাশনার কাজে
কম্পিউটারের মাধ্যমে খুব সহজে ও দ্রুততম সময়ে সংবাদপত্র প্রকাশের বিভিন্ন কাজ করা যায়। কম্পিউটার নেটওয়ার্ক-এর মাধ্যমে যে কোন দেশের যে কোন শহর থেকে একই সময় সংবাদপত্র বের করা যাচ্ছে। এ ছাড়াও ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিশ্বের যে কোন প্রান্তের গ্রাহক সংবাদপত্র কম্পিউটারের পর্দায় পড়তে অথবা প্রিন্টারের মাধ্যমে প্রিন্ট করে নিতে পারছেন।
টেলি কমিউনিকেশনের কাজে
টেলি কমিউনিকেশনের কাজে কম্পিউটার ব্যবহারের ফলে টেলিফোন সেক্টরে ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। টেলিফোন এবং কম্পিউটারের মধ্যে সংযোগ করে খুব দ্রুত সংবাদ পৃথিবীর একস্থান হতে অন্যস্থানে পাঠানো সম্ভব হচ্ছে।
মহাকাশ গবেষণার কাজে
মহাকাশযানের সূক্ষ্ম হিসাব নিকাশ, ডিজাইন, এবং পরিচালনার কাজে কম্পিউটারের ব্যবহার ব্যাপক। এছাড়াও দূর আকাশে নভোচারীর গতিপথ নির্দেশে কম্পিউটার সহায়তা করে ।
প্রতিরক্ষার কাজে কম্পিউটারের ব্যবহার
বোমারু বিমান বা যুদ্ধ জাহাজ নিয়ন্ত্রণ, মিসাইল ও ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ন্ত্রণ ইত্যাদি প্রতিরক্ষার কাজে কম্পিউটারের ভুমিকা অপরিসীম। প্রতিরক্ষার কাজে কম্পিউটারের ব্যবহারের ফলে ব্যাপক উন্নতি সাধিত হয়েছে।
বিমান চলাচল নিয়ন্ত্রণ
কম্পিউটার ছাড়া বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বের বিমান যোগাযোগ অচল। অনলাইনে সিট রিজার্ভেশন, বিমানের চলাচলের রুট নির্ধারণসহ বিভিন্ন কাজে কম্পিউটার ব্যবহার করা হচ্ছে।
শিক্ষার প্রসারের কাজে
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কম্পিটারের মাধ্যমে বিভিন্ন কাজ করা হচ্ছে যেমনঃ ছাত্র-ছাত্রীদের বেতনের হিসাব নিকাশ, দ্রুত পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ, প্রতি বর্ষে ছাত্র-ছাত্রীদের সংখ্যার হিসাব ইত্যাদি। এছাড়া বছর অনুযায়ী পাশ ও ফেল করা ছাত্র-ছাত্রীদের সংখ্যা কম্পিউটার দ্বারা নির্ণয় করা যায়।
বিনোদনের জন্য ব্যবহার
বিনোদনের জন্য কম্পিউটারের ব্যবহার দিন দিন বেড়েই চলেছে। যেমনঃ গেম খেলা, গান শোনা, ছবি দেখা ইত্যাদি। তাছাড়া কম্পিউটারে টিভি কার্ড লাগিয়েও কম্পিউটারকে টিভি হিসাবে ব্যবহার করা যাচ্ছে।
আবহাওয়ার পূর্বাভাস নির্ণয়ে
কম্পিউটারের মাধ্যমে আবহাওয়া সংক্রান্ত বিভিন্ন ধরনের তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করে পূর্বাভাস দেওয়া সম্ভব হয়। যার ফলে আমরা অনেক প্রাকৃতিক বিপর্যয় থেকে রক্ষা পেয়ে থাকি।
ট্রাভেল ট্রান্সপোর্ট সংস্থায় ব্যবহার
কম্পিউটারের ব্যবহারের ফলে ট্রাভেল ট্রান্সপোর্ট সংস্থায় অভূতপূর্ব উন্নতি সাধিত হয়েছে । অনলাইনে টিকিট কাটা থেকে শুরু করে টিকিট বাতিল, হোটেল বুকিং সকল কার্যক্রম কম্পিউটারের মাধ্যমে করা হয়।
কম্পিউটার কি কি কাজে ব্যবহার হয় – শেষ কথা
উপরোক্ত আলোচনার মাধ্যমে আমরা জানতে পারলাম “কম্পিউটার কি কি কাজে ব্যবহার হয়“। আশা করছি আপনারা এই পোষ্টের মাধ্যমে “কম্পিউটার দিয়ে কি কি কাজ করা যায়” তা ভালভাবে জানতে ও বুঝতে পেরেছেন।
তাই আশা করছি, ”কম্পিউটার কি কি কাজে ব্যবহার হয় – কম্পিউটার দিয়ে কি কি কাজ করা যায়” নিয়ে লিখা এই পোষ্টটি আপনাদের উপকারে আসবে।
নতুন একটি কম্পিউটার তৈরি করার সময়ে আপনার নিম্নলিখিত জিনিসগুলি প্রয়োজন হতে পারে:
1. প্রোসেসর (CPU): উচ্চ সক্ষমতার প্রোসেসর নিয়ে ভালো হবে, যেমন Intel বা AMD এর প্রোসেসর।
2. মাদারবোর্ড (Motherboard): সম্পূর্ণ সিস্টেমের কেন্দ্রীয় অংশ, যা সব কাজ সমন্বয় করে।
3. মেমোরি (RAM): কম্পিউটারের গতি ও কর্মক্ষমতা উন্নত করার জন্য প্রয়োজনীয়।
4. হার্ড ড্রাইভ (Hard Drive বা SSD): তথ্য সংরক্ষণ ও অ্যাপ্লিকেশনগুলির জন্য প্রয়োজন।
5. গ্রাফিক্স কার্ড (Graphics Card): গেমিং বা গ্রাফিক্স ডিজাইনে কাজ করলে প্রয়োজন হতে পারে।
6. কেস (Case): সমগ্র কম্পিউটার এবং প্রতিক্রিয়াশীলতা সংরক্ষণের জন্য প্রয়োজন।
7. পাওয়ার সাপ্লাই (Power Supply): সিস্টেম পাওয়ার সরবরাহ করার জন্য প্রয়োজন।
8. অপারেটিং সিস্টেম (Operating System): যেমন Windows, macOS, বা Linux।
এছাড়াও, আপনি যে ধরণের কাজে কম্পিউটারটি ব্যবহার করতে চান তা বিবেচনা করে আপনার সংশ্লিষ্ট কম্পনেন্টগুলি নির্বাচন করতে পারেন।
#কম্পিউটার #কন্ফিগারেশন #হার্ডওয়্যার #সফটওয়্যার #কাস্টমাইজেশন #টেকনোলজি
কম্পিউটার বিষয়ক বিভিন্ন তথ্য পেতে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন
bccomputer24@gmail.com