ঘরে বসে বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করার নিয়ম

বিকাশ হচ্ছে বাংলাদেশের একটি মোবাইল ব্যাংকিং সেবা দানকারী প্রতিষ্ঠান। বাংলাদেশে সর্বপ্রথম মোবাইল ব্যাংকিং সেবা শুরু করেছিলো রকেট।এরপর বিকাশ তাদের ব্যবসা শুরু করে। পরে শুরু করেও বিকাশ এখন বাংলাদেশের সবথেকে জনপ্রিয় একটি মোবাইল ব্যাংকিং সেবা। বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ তাদের টাকা দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে পাঠানোর জন্য বিকাশ ব্যবহার করে থাকে। বিকাশ যেমন সুরক্ষিত, তেমনি অনেক কুচক্র মানুষের একাউন্ট হ্যাক করে টাকা চুরি করার চেষ্টা চালিয়ে যায়।

বিভিন্ন কারণে আমাদের বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করার প্রয়োজন হতে পারে। যেমন : পুরনো সিম বন্ধ করে ফেললে, নতুন বিকাশ একাউন্ট খুললে, বিকাশ একাউন্ট এর নাম্বার পরিবর্তন করে ফেললে। আবার, অনেকেই বিকাশ ব্যবহার বন্ধ করার উদ্দেশ্যেও বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করতে চায়। যেমনটা আমি প্রথমেই বলেছি, আমরা চাইলেই *২৪৭# ডায়াল করেই আমাদের বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করতে পারি না। কিংবা, বিকাশ অ্যাপ ব্যবহার করেও আমরা আমাদের বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করতে পারি না। তাহলে আমরা আমাদের একাউন্ট ক্লোজ করে দিতে চাইলে করণীয় কি?

বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করতে চাইলেই আমাদের বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করার নিয়ম জানতে হবে। এই পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়লে আপনি বিকাশ একাউন্ট কিভাবে বন্ধ করতে হয় সেটি জানতে পারবেন। তো চলুন শুরু করা যাক।

বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করার নিয়ম

বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করার নিয়ম

বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করতে হলে আমাদের কয়েকটি ধাপ অনুসরণ করতে হবে। আপনি যদি আপনার বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করে ফেলতে চান, তবে নিম্নে উল্লিখিত ধাপগুলো সঠিকভাবে অনুসরণ করুন।

বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করার নিয়ম ২টি। এগুলো হচ্ছে : 

  • কাস্টমার কেয়ারে গিয়ে বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করা
  • ঘরে বসে বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করা

তো চলুন , উক্ত নিয়মগুলো দেখে নেয়া যাক।

আরো পড়ুনঃ ঘরে বসে বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম 2023

ধাপ ১ : অ্যাকাউন্ট ব্যালেন্স শূন্য করে ফেলুন

আমরা যদি আমাদের বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করে ফেলতে চাই, তবে আমাদের প্রথমেই বিকাশ একাউন্টের সকল ব্যালেন্স শুন্য করে ফেলতে হবে। আপনার বিকাশ একাউন্টে যদি ব্যালেন্স থাকে, তবে সেগুলো ক্যাশ আউট করে কিংবা সেন্ড মানি করে অথবা অন্য কোনো লেনদেন করে শুন্য করে ফেলুন। আমাদের বিকাশ একাউন্টের ব্যালান্স এর সাথে দশমিক এর পরে শুন্য বা কিছু সংখ্যা থাকে। অর্থাৎ, আমাদের বিকাশের ব্যালান্স এর সাথে পয়সাও থাকে। আপনি যখন কোনো লেনদেন করে বিকাশ একাউন্টের ব্যালান্স শুন্য করে ফেলবেন, তখন সেই পয়সা গুলোও সরিয়ে নিবেন। একাউন্টের ব্যালান্স ০.০০ করে ফেলবেন।

যদি কোনো লেনদেন করেন, তবে তখন সেই শুন্য সহ লেনদেন করবেন। তাহলে, আপনার একাউন্ট থেকে সব টাকা শুন্য হয়ে যাবে।

ধাপ ২ : প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সাথে রাখুন

বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করার নিয়মের দ্বিতীয় ধাপ হচ্ছে, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সঙ্গে রাখা। আমি প্রথমেই বলেছি যে, আমরা যদি আমাদের বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করতে চাই, তবে এটি নিজেই করতে পারবো না। এজন্য আমাদের কাস্টমার কেয়ারে যেতে হবে। বিকাশের কাস্টমার কেয়ারে যাওয়ার সময় আমাদের কিছু কাগজপত্র নিয়ে যেতে হবে।

আপনি আপনার বিকাশ একাউন্টটি খোলার সময় যে তথ্য দিয়েছিলেন, সেগুলো আপনাকে সঙ্গে নিয়ে যেতে হবে। আপনি যদি আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে বিকাশ একাউন্ট খুলে থাকেন, তবে কাস্টমার কেয়ার যাওয়ার সময় আপনাকে আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র নিয়ে যেতে হবে। আপনি যদি আপনার পাসপোর্ট কিংবা অন্য কোনো তথ্য দিয়ে বিকাশ একাউন্ট খুলে থাকেন, তবে কাস্টমার কেয়ার যাওয়ার সময় আপনাকে উক্ত কাগজ নিয়ে যেতে হবে।

ধাপ ৩ : বিকাশ একাউন্টের সিম সাথে রাখা

বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করতে হলে আমাদের যে সিমে বিকাশ একাউন্ট খোলা আছে, সেটি সঙ্গে রাখতে হবে। নয়তো, আমরা আমাদের বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করতে পারবো না। বিকাশের কাস্টমার কেয়ার যাওয়ার সময় আমাদের সিমটি সঙ্গে নিয়ে যেতে হবে। কারণ, কাস্টমার কেয়ার থেকে যখন আমাদের বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করে দিবে, তখন আমাদের এই সিমটি লাগবে।

ধাপ ৪: কাস্টমার কেয়ারে যোগাযোগ করুন

উপরে যে ধাপগুলো আমি উল্লেখ করে দিয়েছি, সেগুলো পূরণ হলে আপনাকে আপনার নিকটস্থ বিকাশের কাস্টমার কেয়ারে যোগাযোগ করতে হবে। এরপর, তারা আপনার থেকে বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করার কারণ জানতে চাইবে, সঠিক কারণ বলার পর আপনার থেকে কাগজপত্র চাইবে। এগুলো দেয়ার পরে তারা আপনার বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করে দিবে।

এই ছিলো বিকাশের কাস্টমার কেয়ার থেকে বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করার নিয়ম। যেকোনো প্রশ্ন থাকলে অবশ্যই মন্তব্য করবেন।

ঘরে বসে বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করার নিয়ম

আমরা চাইলে ঘরে বসেই আমাদের বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করতে পারি। এজন্য আমাদের বিকাশ এর কাস্টমার কেয়ারে যেতে হবে না। ঘরে বসে বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করতে হলে আমাদের বিকাশের হেল্পলাইনে কল দিতে হবে। বিকাশের হেল্পলাইন নাম্বার হচ্ছে 16247 । এই নাম্বারে কল দিলে বিকাশের কাস্টমার এজেন্ট রিসিভ করবে। এরপর তাদেরকে বলবেন যে আপনি আপনার bkash account deactivate করতে চান। 

এরপর তারা আপনার থেকে আপনার বিকাশ একাউন্টের নাম্বার, সর্বশেষ লেনদেনের তথ্য,বিকাশ একাউন্টের ব্যালেন্স, এবং ভোটার আইডি কার্ডের তথ্য চাইবে। এগুলো দেয়ার পর তারা আপনার তথ্য যাচাই করে আপনার বিকাশ একাউন্টটি বন্ধ করে দিবে। 

বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করার পর কি আবার চালু করা যাবে?

আপনি যদি আপনার বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করার পর আবারও চালু করতে চান, তবে আবারও আপনার একই সিম দিয়ে এবং আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে একটি ঘরে বসে বিকাশ একাউন্ট খুলতে পারবেন। 

কিন্তু, আপনি যদি আপনার বিকাশ একাউন্টের নাম্বার পরিবর্তন করার জন্য আপনার বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করতে চান, তবে এটি করতে আপনাকে বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করতে হবে না। আপনি বিকাশ অ্যাপ দিয়েই আপনার বিকাশ একাউন্টের নাম্বার পরিবর্তন করতে পারবেন।

আশা করছি, ঘরে বসে বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করার নিয়ম সম্পর্কে শতভাগ অবগত হয়েছে। এ সম্পর্কে আপনার যদি আর কোনো প্রশ্ন থাকে তবে অবশ্যই মন্তব্য করবেন।

আরো পড়ুনঃ বিকাশ টাকা দেখার নিয়ম ও কোড ২০২৩

যার নামে বিকাশ একাউন্ট তিনি মৃত, কিভাবে তার বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করা যায়?

আপনি যদি একজন মৃত ব্যক্তির বিকাশ একাউন্ত বন্ধ করতে চান, তবে আপনাকে বিকাশের কাস্টমার কেয়ারে উক্ত মৃত ব্যক্তির জাতীয় পরিচয়পত্র এবং তার ২কপি ছবি ও আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র এবং ২কপি ছবি নিয়ে যেতে হবে। অতঃপর, তারা উক্ত ব্যক্তির বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করে দিবে।

আমি কি ঘরে বসে বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করতে পারব?

আপনি চাইলে ঘরে বসেই আপনার বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করতে পারবেন। এজন্য আপনাকে বিকাশ এর হেল্পলাইনে কল দিতে হবে। ঘরে বসে বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করার নিয়ম সম্পর্কে আমি ইতোমধ্যে আপনাদের সাথে আলোচনা করেছি। উক্ত নিয়ম অনুসরণ করলে সহজেই ঘরে বসেই আপনি আপনার বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করতে পারবেন।

বিকাশ একাউন্ট বন্ধ হলে কি করব

যদি কোনো কারণে আপনার বিকাশ একাউন্ট বন্ধ হয়ে যায়, তবে আপনার বিকাশ একাউন্টের সিম এবং আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র নিয়ে নিকটস্থ কাস্টমার কেয়ারে যোগাযোগ করুন। তারা আপনার একাউন্ট আবারও সচল করে দিবে।

আমাদের শেষ কথা

আজকের এই পোস্টে আমি আপনাদের সাথে বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করার নিয়ম নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আশা করছি আপনি ঘরে বসে বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করার নিয়ম সম্পর্কে অবগত হয়েছেন। যদি বিকাশ একাউন্ট সম্পর্কিত আর কোনো প্রশ্ন থাকে, তবে অবশ্যই মন্তব্য করবেন। আজকের মতো এখানেই শেষ করছি। আল্লাহ হাফেয।

 

 

 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন:

Leave a Comment