আপেলের ১০টি উপকারিতা নিয়ে আজকের এই পোস্ট। প্রতিদিন একটি আপেল খাওয়া আপনাকে ডাক্তারের কাছে যাওয়া থেকে দূরে রাখে। জনপ্রিয় এই প্রবাদটির গুরুত্ব বোঝার জন্য আপেল খাওয়ার উপকারী দিকগুলো সম্পর্কে জেনে রাখা ভালো। তার মানে এই নয় যে আপনাকে শুধু আপেল খেতে হবে। একটি আপেলের মতো প্রতিদিন একটি করে কলা খাওয়াও শরীরের জন্য উপকারী। সুস্থ জীবনযাপনের জন্য স্বাস্থ্যকর খাবারে নিজেকে অভ্যস্ত করা প্রয়োজন।
আপেলের ১০টি উপকারিতা
ডাক্তারের কাছে যাওয়ার দরকার নেই – এটি একটি কথার কথা কিন্তু আপেলে বেশ কিছু উপাদান রয়েছে যা আসলে শরীরের জন্য ভালো। স্বাস্থ্যবিষয়ক ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদন অবলম্বনে আপেলের উপকারিতা সম্পর্কে কয়েকটি বিষয় উল্লেখ করা হলো।
ওজন নিয়ন্ত্রণ
স্ন্যাকস বা নাস্তা হিসেবে যদি এমন কিছু খাওয়া যায় যা ওজন কমাতেও সাহায্য করবে, তাহলে সেটা সোনায় সোহাগা। অ্যাপল ঠিক তাই করে। এতে রয়েছে পানি ও ভোজ্য ফাইবার, যা অনেকক্ষণ পেট ভরা রাখে। যেকোনো খাবারের আগে কয়েক টুকরো আপেল খেলে অল্প সময়েই পেট ভরবে। ফলস্বরূপ, আপনি ২০০ ক্যালোরি পর্যন্ত কম গ্রহন করবেন।
স্নায়ুবিক স্বাস্থ্যের উন্নতি
গবেষকরা আপেলে পাওয়া একটি পুষ্টি উপাদান ‘কোয়ার্সেটিন’-এ ‘নিউরোপ্রোটেক্টিভ’ প্রভাব খুঁজে পেয়েছেন। ফলে নিয়মিত আপেল খাওয়ার ফলে মস্তিষ্কের ‘নিউরন’ বেশি দিন সক্রিয় থাকবে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা
আপেল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করে এবং বর্তমান মহামারীতে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সবার সেরা বন্ধু। এছাড়াও পর্দার আড়ালে কাজ করছে ‘কোয়ার্সেটিন’, যা প্রদাহ কমাতেও সাহায্য করবে। তবে আপেলের খোসা ছাড়িয়ে খাওয়া চলবে না।
হৃদরোগের ঝুঁকি
হৃদরোগের ঝুঁকি কমানোর ক্ষেত্রে আপেল এর ভুমিকা খুব বেশি প্রচারিত হয় না। তবে এর উপকারিতা একেবারেই নগণ্য নয়। এছাড়া আপেলে থাকা ‘ফ্ল্যাভোনয়েড’ স্ট্রোকের ঝুঁকি প্রায় ২০ শতাংশ কমিয়ে দেয়। এছাড়া কোলেস্টেরল কমাতেও আপেলের ভূমিকা রয়েছে।
অন্ত্রের স্বাস্থ্য
মানুষ খুব কমই অন্ত্রের স্বাস্থ্য নিয়ে ভাবে। তবে আপনি প্রতিদিন কেমন অনুভব করেন তা মূলত আপনার অন্ত্রের স্বাস্থ্যের উপর নির্ভর করে। হঠাৎ পেটে ব্যথা, ফোলাভাব, কোষ্ঠকাঠিন্য ইত্যাদি অন্ত্রের সমস্যা দ্বারা ব্যাখ্যা করা যেতে পারে। অন্ত্রকে সুস্থ রাখতে কার্যকর একটি ‘প্রোবায়োটিক’ উপাদান হল ‘পেকটিন’ যা আপেল থেকে আসে।
ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়
আপেল আপনাকে ক্যান্সার থেকে দূরে রাখার চাবিকাঠি হতে পারে, বিশেষ করে যারা ধূমপান করেন বা অভ্যস্ত তাদের জন্য। ফুসফুসের ক্যান্সার নিয়ে বেশ কিছু গবেষণায় এমন দাবি করা হয়েছে। এতে ফাইটোকেমিক্যাল এবং ফাইবার থেকে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের সুবিধা রয়েছে, যা কোষকে বিভিন্ন ক্ষতি থেকে রক্ষা করে।
ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমায়
প্রতি সপ্তাহে কয়েকটি আপেল খাওয়া আপনাকে ডায়াবেটিস থেকে রক্ষা করতে পারে। এবং আরও ভাল যদি আপনি প্রতিদিন একটি করে খান তবে এটি প্রায় ২৮ শতাংশ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি হ্রাস করে বলে বিশেষজ্ঞরা দাবি করেন।
অ্যালার্জি থেকে সুরক্ষা
আপনার প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় আপেল যোগ করার আগে আপনাকে জানতে হবে এই ফল বা ফলের কোনো উপাদানে আপনার অ্যালার্জি আছে কিনা। যদিও এটি বিরল, তবে সাবধানের মার নেই। আপেল খাওয়ার পর ত্বক ফুলে যাওয়া, চুলকানি, জিভে চুলকানি ইত্যাদি দেখা দিলে বুঝতে হবে আপনার অ্যালার্জি আছে। এক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
হাঁপানির তীব্রতা কমাতে
আপনি নিয়মিত কতটা আপেল খান তার উপর নির্ভর করে হাঁপানির সমস্যা কমে। ‘অ্যাডভান্সেস ইন নিউট্রিশন’ জার্নালে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন অনুসারে, প্রায় ৬৮০০০ জন মহিলার উপর করা একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে যে অংশগ্রহণকারীরা দিনে একটি আস্ত আপেল খান তাদের হাঁপানির তীব্রতা সবচেয়ে বেশি হ্রাস পেয়েছে। যারা প্রতিদিন ১৫ শতাংশ আপেল খেয়েছেন তাদের রোগের তীব্রতা ১০ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।
দাঁত সাদা করে
আপেল দাঁতের হলদে ভাব দূর করতেও কার্যকর। আপেল চিবিয়ে খেলে দাঁতের মাঝখানে আটকে থাকা খাবারের কণা এবং দাঁতের হলুদাভ আবরণ পরিষ্কার হয়। আপেলের অ্যাসিডিক গুণ এখানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
আরও পড়ুনঃ হার্টের স্বাস্থ্য ভাল রাখার ৫ উপায়