মেমোরি কাকে বলে?
মেমোরি শব্দের অর্থ হলো স্মৃতি শক্তি। অর্থাৎ যে শক্তির দ্বারা কোন ডিভাইসে তথ্য ধরে রাখা যায় তাকে মেমোরি বলে। কম্পিউটারের এই স্মৃতি শক্তি হলো এমন একটি ডিভাইস যার ভিতরে বিভিন্ন তথ্য ধরে রাখা যায় এবং প্রয়োজনী মুহূর্তে সেখান থেকে তথ্য সংগ্রহ করে আবার ব্যবহার করা যায়। এক কথায় বলতে গেলে কম্পিউটারের যে অংশে স্থায়ী বা অস্থায়ীভাবে তথ্য-উপাত্ত জমা হয় তাকে কম্পিউটারের স্মৃতি বা মেমোরি বলে। কম্পিউটারের মেমোরি হিসাবে র্যাম, রম, হার্ডডিস্ক, সিডি, ডিভিডি, প্রেনড্রাইভ ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়। মেমোরিতে দুই ভাবে অর্থাৎ স্থায়ী ও অস্থায়ী ভাবে তথ্য ও উপাত্ত সংরক্ষণ করা যায়।
কম্পিউটারের মেমোরি কত প্রকার:
কম্পিউটারে ব্যবহৃত মেমোরি বা মেমোরির কার্যপ্রণালীর মূলনীতি, ভৌতিক বৈশিষ্ট্য ও মাইক্রো প্রসেসরের সাথে সংযোগ, ব্যবহৃত মাধ্যম এবং নির্মাণ কৌশলের উপর ভিত্তি করে কম্পিউটারের মেমোরিকে বিভিন্ন শ্রেণীতে ভাগ করা যায়। কম্পিউটারের মেমোরিকে প্রধানত দুই ভাগে ভাগ করা যায়।
কম্পিউটার মেমোরির প্রকারভেদ :
কম্পিউটারের মেমোরি প্রধানত ০২ প্রাকার। যথা-
- প্রধান মেমোরি (Main Memory)।
- সহায়ক মেমোরি (Auxiliary Memory)।
প্রধান মেমোরি (Main Memory):
কম্পিউটারের প্রধান মেমোরিকে হার্ডডিস্ক বা রোম বলে যা কার্যের উপর ভিত্তি করে কাজ করে। এই মেমোরিতে তথ্য-উপাত্ত সংরক্ষণ করা যায় এবং পাঠও করা যায়। বিদ্যুৎ প্রবাহ বন্ধ হলে এই মেমোরি হতে তথ্য-উপাত্ত মুছে যায়। এই ধরনের মেমোরিকে Random Access Memory বা র্যাম বলা হয়। কম্পিউটারের আরেকটি মেমোরি আছে তার নাম Read Only Memory বা রম। এই মেমোরি হতে শুধু মাত্র তথ্য-উপাত্ত পড়া যায় কিন্তু কিছু লিখা যায় না। বিদ্যুৎ প্রবাহ বন্ধ হলেও এ মেমোরি হতে তথ্য- উপাত্ত মুছে যায় না।
প্রধান মেমোরি কাকে বলে :
প্রধান মেমোরি হলো যে মেমোরির সাথে সিপিইউ এর গাণিতিক ও যুক্তি অংশের প্রত্যক্ষ সংযোগ থাকে তাকেই প্রধান মেমোরি বলা হয়। প্রধান মেমোরিতে সে সব তথ্য-উপাত্ত থাকে, যা সবসময় প্রয়োজন হয়। এটি হলো লিখন পাঠন মেমোরি। প্রক্রিয়া করণের জন্য প্রোগ্রাম ও ডাটা স্মৃতিতে সংরক্ষণ করা হয়। এই ধরণের মেমোরির কার্যবলী অত্যন্ত দ্রুতগতির হয়। এই মেমোরির সঞ্চয় ক্ষমতা কম থাকে। প্রধান মেমোরিকে আবার অভ্যান্তরীণ মেমোরি ও বলা হয়।
প্রধান মেমোরীর বৈশিষ্ট :
কম্পিউটারের প্রধান মেমোরির বৈশিষ্ট হলো চলমান প্রোগ্রাম, তথ্য-উপাত্ত, হিসাব নিকাশ ইত্যাদির ফলাফল অস্থায়ী ভাবে সংরক্ষণ করে। প্রসেসরের খুব কাছে থাকায় এবং সর্ম্পূণ ইলেকট্রনিক্স পদ্ধতিতে নিয়ন্ত্রিত হওয়ায় প্রধান মেমোরিতে তথ্য-উপাত্ত সংরক্ষণ ও তা পঠানের গতি দ্রুত হয়। মেমোরি কাকে বলে
কম্পিউটারের প্রধান মেমোরিকে আবার দুই ভাগে ভাগ করা যায় যথা-
- RAM (Random Access Memory)
- ROM (Read Only Memory)
(RAM) র্যাম কি ককে বলে:
কম্পিউটারের প্রোগ্রাম রানিং করলে মাদারবোর্ডর সাথে সরাসরি যুক্ত থেকে অস্থায়ী ভাবে যে মেমোরিতে কোন কাজ করা হয় তাকে র্যাম বলে। RAM এর পূর্ণ্রুপ হলো Random Access Memory। যতক্ষণ কম্পিউটারে বিদ্যুৎ সরবারহ চলমান থাকে ততক্ষণ Random Access Memory তে তথ্য-উপাত্ত সংরক্ষিত থাকে। বিদ্যুৎ সরবারহ বন্ধ হয়ে গেলে র্যামের যাবতীয় স্মৃতি মুছে যায় বলে র্যামকে অস্থায়ী মেমোরি হিসাবে অবহিত করা হয়। কম্পিউটার চালু হবার সাথে সাথে এই স্মৃতি বা মেমোরি রানিং প্রোগ্রামে কাজ করে।
(ROM) রম কি কাকে বলে:
(ROM) রম হলো প্রধান মেমোরির স্থায়ী অংশ যাতে সর্বদা ডাটা সংরক্ষিত থাকে। কম্পিউটার তৈরী করার সময় এই স্মৃতিতে কিছু প্রোগ্রাম রাখা হয় যাকে বলে অপারেটিং সিস্টেম বা উইন্ডোজ যা সবসময় ROM এ সংরক্ষিত থাকে। এই মেমোরি থেকে যেকোন উপাত্ত পড়া যায়। কোন তথ্যের পরিবর্তন পরিবর্ধন বা সংশোধন করা যায় না। এজন্য একে Read Only Memory বলা হয়। কম্পিউটার বন্ধ করলেও এই মেমোরিতে স্মৃতি সংরক্ষিত থাকে যেমন- হার্ডডিস্ক।
সহায়ক মেমোরি (Auxiliary Memory):
যে মেমোরির সাথে মাইক্রো প্রসেসরের সরাসরি কানেকশন থাকে না, নির্দিষ্ট কন্ট্রোলের মাধ্যমে সংযোগ রক্ষা করে থাকে তাকে সহায়ক বা অভ্যান্তরীণ মেমোরি বলা হয়। ব্যবহারকারী এটি থেকে ভবিষ্যতের প্রয়োজনীয় উপাত্ত বা প্রোগ্রামকে স্থায়ীভাবে সঞ্চয় করতে পারে বলে একে সহায়ক মেমোরি বলা হয়। সাধারণতঃ চৌম্বক টেপ, চৌম্বক ডিস্ক, অপটিক্যাল ডিস্ক, পোর্টেবল ডিস্ক, প্রেনড্রাইভ ইত্যাদি হলো সহায়ক মেমোরি বা Auxiliary Memory।
মেমোরি পরিমাপের একক :
কম্পিউটারের কাজের প্রকৃতি ও গতির বৃদ্ধির লক্ষে বিভিন্ন আকারের মেমোরি ব্যবহৃত হয়। মেমোরি পরিমাপের জন্য বিভিন্ন একক ব্যবহৃত হয়। যেমন- বিট, বাইট, কিলোবাইট, মেগাবাইট, গিগাবাইট ইত্যাদি।
(Bit) বিট কি কাকে বলে:
বাইনারী সংখ্যা পদ্ধতিতে 0 এবং 1 কে বিট বলে। ইংরেজি বাইনারী শব্দের Bi ও Digit শদের t নিয়ে Bit শব্দটি গঠন করা হয়েছে। এবং ডিজিটাল কম্পিউটারের মেশিন ভাষা হলো বিট 0, 1 এক্ষেত্রে 0 নিয়ে নিম্ন ভোল্টেজ এবং 1 দিয়ে হাই ভোল্টেজ নির্দেশ করে থাকে।
(Byte) বাইট কি কাকে বলে:
আট বিটে একবাইট হয়। এভাবে ৮ বিটের কোড দিয়ে যে কোন বর্ণ, অংক বা বিশেষ চিহ্নকে প্রকাশ করা হয়ে থাকে। এরুপ ৮ বিট বিশিষ্ট শব্দকে বাইট বলা হয়। কম্পিউটারের মেমোরি পরিমাপের জন্য ব্যবহৃত বিভিন্ন এককের মধ্যে সর্ম্পক-
- 8 বিট = 1 বাইট
- 1024 বাইট = 1 কিলোবাইট
- *1024 কিলোবাইট = 1 মেগাবাইট
- 1024 মেগাবাইট = 1 গিগাবাইট
- *1024 গিগাবাইট = 1 টেরাবাইট
- 1024 টেরাবাইট = 1 হেক্সাবাইট
মেমোরির ধারণ ক্ষমতা :
কম্পিউটার মেমোরি সাধারণতঃ বাইনারী ডিজিট বা শব্দ ধারণের ক্ষমতাকে মেমোরি ধারণ ক্ষমতা বলা হয়। ধারণ ক্ষমতার ক্ষুদ্রতম একক হলো কিলোবাইট। কিলোবাইটকে KB দ্বারা প্রকাশ করা হয় থাকে। বর্তমানের হার্ডডিস্কের ধারণ ক্ষমতা 1024 গিগাবাইট থেকে টেরাবাইট পর্যন্ত। বর্তমানের প্রেনড্রাইভের সর্বোচ্চ ধারণ ক্ষমতা হলো 128 জিবি পর্যন্ত।
ক্যাশ মেমোরি (Cache Memory) কাকে বলে?
প্রধান মেমোরির গতি সিপিইউ-এর প্রসেসিং গতি থেকে কম হয়ে থাকে যার ফলে ডেটা আদান-প্রদানে অসামঞ্জস্যের সৃষ্টি হয়। আর এই অসামঞ্জস্যতা থেকে মুক্তি লাভের জন্য প্রসেসর ও প্রধান মেমোরির মাঝখানে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন যে মেমোরি ইউজ করা হয় তাকে ক্যাশ মেমোরি (Cache Memory) বলে। এই মেমোরি সবচেয়ে দামি ও উচ্চ গতিসম্পন্ন হয়ে থাকে।মেমোরি কাকে বলে
ক্যাশ মেমোরির বৈশিষ্টঃ
১. সিপিইউ এর সাথে সরাসরি যুক্ত থাকে।
২. প্রধান মেমোরির গতি বৃদ্ধির কাজে ব্যবহৃত হয়।
পরিশেষে:
কম্পিউটারের মেমোরি কাকে বলে কত প্রকার ও কি কি সম্পর্কে আরো কিছু জানার থাকলে আমাকে কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে ভূলবেন না। কম্পিউটারের প্রতিটা বিষয় নিয়মিত আপনারদের কাছে উপস্থাপন করার চেষ্টা করবো ইনশাল্লাহ। আশা করি আপনারা আমাদের সাথে থাকবেন। আর কম্পিউটারের মেমোরি কাকে বলে কত প্রকার ও কি কি এইলেখাটি ভালো লাগলে লাইক এবং শেয়ার করে আপনার বন্ধুদের কাছে ছড়িয়ে দিন।
আরো নতুন কিছু শিখুন:
২। কম্পিউটার কাকে বলে কত প্রকার ও কি কি
৩। সফটওয়্যার কি, সফটওয়্যার এর কাজ কি
৪। কম্পিউটারের জনক কে কেন তাকে জনক বলা হয়