মাউস কি। মাউস কি ধরনের ডিভাইস

কম্পিউটার কাকে বলে কত প্রকার ও কি কি

মাউস কি- মাউস কি ধরনের ডিভাইস- বর্তমানে এমন কাউকে পাওয়া যাবে না যে কম্পিউটারের নাম শোনেনি। মোটামুটি আমরা সকলেই কম বেশি কম্পিউটারের কথা জানি। কিন্তু আমরা অনেকেই কম্পিউটারের কথা জানলেও কম্পিউটারের ডিভাইস সম্পর্কে তেমন জানি না। কম্পিউটারের তেমন একটি ডিভাইস হলো কম্পিউটারের মাউস। অনেকে মাউস চিনলেও মাউস কি ধরনের ডিভাইস, মাউসের কাজ কি অর্থাৎ মাউসের ব্যবহার ‍সম্পর্কে তেমন জানে না।

তাই ‍আজকের পোষ্টে আমরা জানব মাউস কি, মাউস কি ধরনের ডিভাইস, মাউস এর বর্ণনা, মাউস কে আবিস্কার করেন, মাউস কত প্রকার ও কি কি, মাউস এর বিভিন্ন অংশ, মাউস এর বৈশিষ্ট্য, মাউসের কয়টি বাটন থাকে, মাউস পয়েন্টার এর কাজ কি ইত্যাদি মাউস সম্পর্কে সকল বিষয়ে।

মাউস-কি।-মাউস-কি-ধরনের-ডিভাইস

মাউস কি

মাউস কম্পিউটার পরিচালনায় একটি গুরুত্বপূর্ণ ইনপুট ডিভাইস। ১৯৬৪ সালে ডগলাস এঙ্গেলবার্ট (Douglas Engelbart) মাউস আবিস্কার করেন। প্রথমদিকে এটির নাম ”The Bug” নামে পরিচিত ছিল পরে এটি দেখতে ডিম্বাকার ইদুরের মতো দেখায় বলে এর নাম রাখা হয় মাউস (MOUSE)। MOUSE একটি ইংরেজী শব্দ যার পূর্ণরুপ হলো “Manually Operated Utility For Selecting Equipment”. মাউসের সাধারণত তিনটি অংশ থাকে বাম দিকে একটা বাটন, ডান দিকে একটা বাটন ‍আর মাঝখানে হুইল বা চাকার মতো একটি অংশ থাকে যেটা ঘুরালে ঘোরে এটাকে বলা হয় হুইল বা স্ক্রল বাটন। কম্পিউটার ব্যবহারকারীরা মাউসের এই সব বাটন ব্যবহার করে কম্পিউটারের বিভিন্ন কাজের নির্দেশনা প্রদান করে যেমনঃ কম্পিউটার স্ক্রীনে বিভিন্ন পয়েন্ট ‍সিলেকশন, ফাইল বা ফোল্ডার খোলা-বন্ধ করা, ড্রাগ করা, ড্রপ করা, উপরে যাওয়া, নিচে যাওয়া ইত্যাদি বিভিন্ন প্রকার কাজ মাউস দ্বারা করা হয়ে থাকে। এছাড়া টেক্সট সিলেকশন, কপি করা, পেষ্ট করা এই রকম নানাবিধ কাজ মাউস দ্বারা করা হয়ে থাকে। ডেক্সটপ ব্যবহারকারীর তো মাউস ছাড়া কম্পিউটার চালনা প্রায় অসম্ভব একটা ব্যাপার। মাউস ব্যবহার করার জন্য একটা মাউস প্যাড ব্যবহার করা হয় যা মাউসকে নড়াচড়া করাতে বা মাউস দ্বারা দ্রুত কাজ করা সম্ভব হয়।

মাউস এর পূর্ণরূপ । mouse ka full form

মাউস একটি ইংরেজী শব্দ যার ইংরেজী বানান হলো MOUSE, যা মাউস নামক আউটপুট ডিভাইসের সংক্ষিপ্ত রুপ। যার একটি ফুল মিনিং বা অর্থ রয়েছে। MOUSE এর ফুল মিনিং হলোঃ

M = Manually

O = Operated

U = User

S = Selection

E = Equipment

অর্থাৎ ম্যানুয়ালি বা হাতে পরিচালিতে এক ধরনের ডিভাইস হলো মাউস।

মাউস কি ধরনের ডিভাইস

মাউস একটি ইনপুট ডিভাইস যা কম্পিউটারে ডাটা, তথ্য বা নিয়ন্ত্রণ সংকেত পাঠাতে সক্ষম। মাউস এমন একটি ইনপুট ডিভাইস যা  আপনাকে আপনার হাত দিয়ে একটি সমতল পৃষ্ঠজুড়ে মাউসের কার্সার বা পয়েন্টার এর স্থানাংক বা গতিবিধি নিয়ন্ত্রন করতে দেয়। মাউসের বাম বাটন ব্যবহার করে কম্পিউটারের প্রায় ‍সকল কমান্ড দেয়া হয় আর ডান বাটন ব্যবহার করে অতিরিক্ত মেনু ব্যবহার করা হয়। কম্পিউটার বা ল্যাপটপ বা যেকোনো ডিভাইসে মাউস ব্যবহার করার জন্য হাতের ব্যবহার করতে হয় বলে মাউসকে hand operated input device ও বলা হয়ে থাকে।

মাউসের পয়েন্টার কাকে বলে

কম্পিউটার, ল্যাপটপ বা অন্য কোন ডিভাইসে মাউসের সংযোগ দেওয়ার পরে মাউস নাড়াচাড়া করলে একটি এরো চিহ্ন দেখা যায়। এই এ্যারো চিহ্নকে মাউস পয়েন্টার বলে। কার্সরের মূল কাজ হলো কম্পিউটার স্কীনের বিভিন্ন জায়গাকে পয়েন্ট করা।

মাউস কে আবিস্কার করেন

১১৯৬৪ সালে ডগলাস এঙ্গেলবার্ট (Douglas Engelbart) মাউস আবিস্কার করেন। তিনি সেই সময়ে Stanford Research Institute এ কাজ করতেন এবং মাউস আবিষ্কার করেছিলেন। কিন্তু ডগলাস এঙ্গেলবার্ট  এর সেই তৈরি করা মাউস বর্তমান মাউসের মতো ছিল না। তার তৈরি করা মাউসের দুইটি কাঠের চাকা ছিলো, যার মাধ্যমে মাউসকে ডানে বামে সামনে পিছনে নেওয়া যেত। পরবর্তী সময়ে সংস্কার করতে করতে আজকের আধুনিক মাউস তৈরি করা হয়।

কম্পিউটার মাউস কত প্রকার ও কি কি ?

বর্তমানে অনেক প্রকারের মাউস আছে তারমধ্যে উল্লেখযোগ্য মাউস ৫ প্রকার।  নিন্মে মাউসের প্রকারভেদগুলো তুলে ধরা হলোঃ

  • Mechanical Mouse
  • Optical Mouse
  • Wireless Mouse
  • Trackball Mouse
  • Stylus Mouse

Mechanical Mouse

Bill English ১৯৭২ সালে ম্যাকানিক্যাল মাউস আবিস্কার করেন। কম্পিউটারকে নির্দেশ দেওয়ার ক্ষেত্রে এই মাউস এক ধরণের ছোট বল (ball) এর ব্যবহার করে থাকে। সেজন্যে এই মাউসকে Ball Mouse ও বলা হয়। এই মাউসে ব্যবহৃত বল টিকে ডানদিকে, বামদিকে বা উপর এবং নিচে সবদিকে ইচ্ছামতো ঘুরানো যায়। এই টাইপের মাউস গুলো আগের দিনের পুরোনো  কম্পিউটার গুলোর সাথে অধিক ব্যবহার করা হতো।

Optical Mouse

আধুনিক কম্পিউটার সিস্টেম গুলোতে যে টাইপের মাউস সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করা হয় তা হলো অপটিক্যাল মাউস। এই মাউসগুলো প্রচুর পরিমানে ব্যবহার করা হয়। এই টাইপের মাউসগুলো  LED – Light Emitting Diode এবং DSP – Digital Signal Processing প্রযুক্তির সাথে কাজ করে থাকে। অপটিক্যাল মাউসের মধ্যে ম্যাকানিক্যাল মাউসের মতো কোনো প্রকার ball ব্যবহার করা হয়না। তবে, বলের পরিবর্তে সেই জায়গায় একটি ছোট বাল্ব লাইট লাগানো থাকে। আর সেই কারণে, এই ধরনের মাউস নড়াচড়া করলেই মাউস এর পয়েন্টার হিলতে শুরু করে। অপটিক্যাল মাউস গুলোকে একটি তারের মাধ্যমে কম্পিউটারের সাথে সংযুক্ত করা হয়। এই ধরণের আধুনিক মাউস গুলো ব্যবহারকারীর জন্য প্রচুর সুবিধাজনক হয়ে থাকে।

Wireless Mouse

যে মাউসগুলো তার ছাড়া বেতার মাধ্যমে কম্পিউটার এর সাথে সংযুক্ত হয়, সেই মাউসগুলোকে wireless mouse বলে। যে কোন ডেক্সটপ কম্পিউটার বা ল্যাপটপের সাথে ওয়্যারলেস মাউসগুলো বর্তমান সময়ে প্রচুর পরিমানে ব্যবহার করা হয়। এই টাইপের মাউসগুলোকে কর্ডলেস মাউসও বলা হয়ে থাকে। ওয়্যারলেস মাউসগুলো মূলত  Radiofrequency (RF) প্রযুক্তির সাথে কাজ করে থাকে, তবে এদেরকে Optical Mouse এর মতোই তৈরি করা হয়। wireless mouse গুলোকে কম্পিউটারের সাথে সংযুক্ত করে ব্যবহার করার জন্য একটি Transmitter বা Receiver এর প্রয়োজন হয়ে থাকে। Transmitter টি mouse এর মধ্যেই লাগানো থাকে এবং Receiver টিকে আলাদা ভাবে তৈরি করা হয় যেটাকে কম্পিউটারের মধ্যে লাগাতে হয়। এই টাইপের মাউস গুলো ব্যবহার করার জন্য মাউসে আলাদা ভাবে ব্যাটারী সংযোগ করতে হয়।

Trackball Mouse

Trackball Mouse গুলো দেখতে প্রায় Optical Mouse এর মতোই। তবে, অপটিক্যাল মাউসের ন্যায় দেখতে হলেও এই মাউস গুলোতে নিয়ন্ত্রণের কাজের ক্ষেত্রে Trackball ব্যবহার করা হয়। কম্পিউটারকে নির্দেশ প্রদানের জন্য, ব্যবহারকারীকে নিজের আঙুল বা থাম্ব এর ব্যবহার করে বল টিকে ঘুরাতে হয়। এই টাইপের মাউস ব্যবহার করাটা তেমন সুবিধাজনক মনে হয় না।

Stylus Mouse

Stylus Mouse গুলোকে gStick Mouse ও বলা হয়ে থাকে। কারণ  Stylus Mouse এর আবিষ্কারক Gordon Stewart.  আর সেই কারনে, বলা যেতে পারে যে g Stick এর “G” মানে হলো “Gordan”. এই মাউস কলমের মতো দেখতে হয়ে থাকে, যেখানে একটি চাকার মতো (wheel) অংশ থাকে। এই মাউসকে কলমের মতো ধরে চাকাটিকে ওপর নিচে করে কার্সর টি নিয়ন্ত্রণ করা বা নড়াচড়া করানো সম্ভব।

মাউস এর বিভিন্ন অংশ ও কাজ

মাউসের বিভিন্ন অংশ ও তাদের কাজ আলাদা। নিচে মাউসের বিভিন্ন অংশ ও তাদের কাজ সম্পর্কে আলোচনা করা হলোঃ

বডি বা কেসিং (Body or Casing)

মাউসের মূল অংশ হলো বডি বা কেসিং। অর্থাৎ যার উপরে হাত রেখে আমরা মাউসকে পরিচালনা করি।

স্ক্রল হুইল (Scroll Wheel) 

মাউসের ওপরে গোল চাকার মতো দেখতে অংশটিতে বলা হয় স্ক্রল হুইল যা আমরা স্ক্রল করার জন্য ব্যবহার করি। অর্থাৎ কোন কিছু ওয়েব পেজ বা ডকুমেন্টস কে উপর থেকে নিচে বা নিচ থেকে উপরে নিয়ে যাওয়ার জন্য স্ক্রলিং এর ব্যবহার করা হয় ।

বাম বাটন (Left Button)

মাউসের বাম পাশের বাটন ব্যবহার করে কম্পিউটারের বেসিক যে কমান্ডগুলো আছে সেগুলো দেয়া হয়। যেমন: ফাইল বা ফোল্ডার ওপেন ক্লোজ করা, কোন লেখাকে সিলেক্ট বা আনসিলেক্ট করা, কপি করা, পেষ্ট করা ইত্যাদি সকল প্রকার প্রাথমিক কাজগুলো মাউসের বাম বাটন ব্যবহার করে কিরা হয়।

ডান বাটন (Right Button)

মাউসের ডান বাটন ব্যবহার করে মাউসের এডভান্স লেভেলের কমান্ডগুলোর অপশন পাওয়া যায়, যা মাউসের বাম পাশের বাটনে সম্ভব হয় না।

সাইড বোতাম (Side Buttons)

 সাধারণ মাউসে সাইড বাটন দেখা যায় না কিন্তু বর্তমানে এডভান্স লেভেলের মাউস গুলোতে মাউসের সাইট বাটন দেখতে পাওয়া যায়।  মাউসের এই সাইড বাটন সাধারণত নেভিগেশন এর কাজে ব্যবহার করা হয়।

আরও পড়ুন: কম্পিউটারের জনক কে কেন তাকে জনক বলা হয়

ওপ্টিক্যাল সেন্সর (Optical Sensor)

যখন আমরা মাউসকে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় নড়াচড়া করাই তখন মাউসের নিচে থাকা সেন্সর অর্থাৎ অপটিক্যাল সেন্সর কম্পিউটারকে ইন্সট্রাকশন পাঠায় অর্থাৎ কম্পিউটার কে ঘুম থেকে জাগিয়ে তোলে কাজ করার জন্য।

মাইক্রোপ্রসেসর

মাউসের মধ্যে স্থাপিত সকল  ধরনের মাইক্রো প্রসেসর মাউসের কন্ট্রোল করতে সাহায্য করে। এই মাইক্রোপ্রসেসর ছাড়া মাউস সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারবেনা কোন সময় কোন কাজটি করতে হবে। মুলত এই মাইক্রোপ্রসেসরই নির্ধারণ করে মাইস কোন সময়ে কোন কাজটি করবে।

সার্কিট বোর্ড

কম্পিউটার সঙ্গে মাউসকে সংযোগ স্থাপন  করার জন্য মাউসের ভিতরে থাকা ছোট বোর্ডটি মাউসের খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি সার্কিট। মাউসের মধ্যে ব্যবহৃত  সার্কির বোট এর প্রধান কাজ হল কম্পিউটার সঙ্গে মাউসের সংযোগ স্থাপন করা  এবং বিভিন্ন মুভমেন্ট গুলো ক্যাপচার করে প্রয়োজন অনুযায়ী ছোট ছোট মাইক্রোপ্রসেসর সহ বিভিন্ন সেন্সরের ছড়িয়ে দেওয়া।

মাউস এর কাজ কি ? (Function of mouse)

বন্ধুরা এখন আমরা জানব মাউস এর কাজগুলো কি কি সেই সম্পর্কে।

১. Mouse cursor সরানো:

এটা হলো মাউসের প্রাইমারি কাজ। এটার সাহায্যে মাউসের কার্সরকে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে মুভ করা হয়।

২. Open or execute a program:

কম্পিউটার ব্যবহারকারী মাউস ব্যবহার করে যে কোন ফাইল, ফোল্ডার, আইকন বা অন্য কোন প্রোগ্রাম ওপেন বা ক্লোজ  করতে পারেন।

৩. Select:

মাউস ব্যবহার করে যে কোন লেখাকে সিলেক্ট করা, কপি করা, পেষ্ট করা, হাইলাইট করা যায়।

৪. Drag-and-drop:

মাউস ব্যবহার করে একজন ইউজার খুব সহজেই ডডকুমেন্ট গুলোকে  drag-and-drop করতে পারবেন।

৫. Hover:

মাউস ব্যবহার করে যেকোনো object এর ওপরে hover করা যেতে পারে। এখন প্রশ্ন জাগে Hover কি? Hover হলো সেই প্রক্রিয়া বা সময়টিকে বলা হয় যখন আপনি মাউসের কার্সরটিকে যেকোনো object এর ওপরে নিয়ে যাবেন এবং তার মাধ্যমে আপনাকে কিছু তথ্য প্রদান করবে।

৬. Scroll:

Mouse ব্যবহার করে আমরা কম্পিউটার স্ক্রিনের থেকে বড় বা লম্বা documents বা page গুলোকে দেখার জন্য নিচে এবং ওপরে স্ক্রল (scroll) করতে পারি।

মাউসের ব্যবহার কি কি?

  • কার্সার নিয়ন্ত্রণ: মাউসের প্রাথমিক কাজ হলো স্ক্রিনে কার্সার নিয়ন্ত্রণ করা।
  • আইটেম নির্বাচন: মাউসের বাম বোতাম ব্যবহার করে আপনি ফাইল, ফোল্ডার এবং অন্যান্য আইটেম নির্বাচন করতে পারেন।
  • আইটেম টেনে সরানো: মাউসের বাম বোতাম ধরে রেখে আপনি ফাইল, ফোল্ডার এবং অন্যান্য আইটেম টেনে সরাতে পারেন।
  • ডাবল-ক্লিকিং: মাউসের বাম বোতাম দ্রুত দুবার ক্লিক করে আপনি ফাইল বা অ্যাপ্লিকেশন খুলতে পারেন।
  • রাইট-ক্লিকিং: মাউসের ডান বোতাম ক্লিক করে আপনি অতিরিক্ত মেনু খুলতে পারেন।
  • স্ক্রোলিং: মাউসের স্ক্রোল হুইল ব্যবহার করে আপনি একটি ডকুমেন্ট বা ওয়েব পৃষ্ঠায় উপরে বা নিচে স্ক্রোল করতে পারেন।
  • জুমিং: মাউসের স্ক্রোল হুইল ব্যবহার করে আপনি একটি ছবি বা ডকুমেন্ট জুম ইন বা আউট করতে পারেন।

মাউস কিভাবে কাজ করে?

আধুনিক মাউসগুলো সাধারণত অপটিক্যাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে। মাউসের নিচে একটি LED এবং একটি সেন্সর থাকে। যখন আপনি মাউস নড়ান, LED আলো প্রতিফলিত করে এবং সেন্সর সেই আলোর পরিবর্তনগুলি ট্র্যাক করে। এই তথ্যটি কম্পিউটারে পাঠানো হয়, যেখানে এটি স্ক্রিনে পয়েন্টারের গতি এবং অবস্থান নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যবহৃত হয়।

মাউস পয়েন্টার এর কাজ কি

মাউস কম্পিউটারে ব্যবহার করার সময় মাউসের কার্সরটি কম্পিউটার স্ক্রিনে দেখা যায় । মাউস নড়াচড়া করলে কম্পিউটার স্ক্রিনে থাকা মাউসের কার্সর ও এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় নড়াচড়া করবে। মাউসের কার্সরের কাজ হলো কম্পিউটার স্কীনের বিভিন্ন জায়গা কে পয়েন্ট করা। এই কার্সার টির অপর নাম হল মাউস পয়েন্টার। আশা করি আপনারা মাউস পয়েন্টার এর কাজ কি এই ব্যাপারটাই বুঝতে পারলেন।

মাউস সম্পর্কে কিছু মজার তথ্য

  • প্রথম কম্পিউটার মাউসটি কাঠের তৈরি ছিল এবং এতে দুটি চাকা ছিল।
  • “মাউস” নামটি ডিজনি অ্যানিমেটেড চরিত্র মিকি মাউসের নামে রাখা হয়েছিল কারণ তার লেজের তারের মতো চেহারা ছিল।
  • 1980-এর দশকের শুরুতে, অ্যাপল কোম্পানি প্রথম মাউস তৈরি করে যাতে একটি একক বোতাম ছিল।
  • প্রথম মাউস যা স্ক্রোলিং করতে পারত তা 1990 সালে লজיטেক তৈরি করেছিল।
  • আজকের মাউসগুলিতে 1000 DPI (ডটস পার ইঞ্চি) এরও বেশি রেজোলিউশন থাকতে পারে, যার অর্থ তারা প্রতি ইঞ্চিতে 1000 টিরও বেশি পয়েন্ট ট্র্যাক করতে পারে।
  • বিশ্বের সবচেয়ে বড় মাউসটি 16 ফুট লম্বা এবং 6 ফুট চওড়া।
  • কিছু লোক আছে যারা তাদের কম্পিউটার নিয়ন্ত্রণ করতে তাদের পা ব্যবহার করে তাদের মাউসের পরিবর্তে।
  • মাউস গেমিংয়ে খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
  • কিছু মাউস এমনকি অনুবাদ, ডিক্টেশন এবং সঙ্গীত তৈরির মতো বিশেষ বৈশিষ্ট্য সহ আসে।

মাউস ব্যবহারের নিয়ম

মাউস ব্যবহারের কিছু নিয়ম মেনে চললে আপনি আপনার কম্পিউটারকে আরও সুন্দর ভাবে চালাতে পারবেন। কম্পিউটারের মাউস ব্যবহারের কিছু গুরুত্বপূর্ণ নিয়ম নীচে দেওয়া হলো:

হাতের অবস্থান

মাউসটি এমনভাবে ধরুন যাতে আপনার হাত আরামদায়ক থাকে এবং আপনার আঙ্গুলগুলি সহজেই বোতামগুলিতে পৌঁছাতে পারে। আপনার কব্জি সোজা রাখুন এবং মাউসটি আপনার কব্জির সমান্তরালে রাখুন। আপনার কনুইটি 90 ডিগ্রি কোণে রাখুন এবং এটিকে আপনার শরীরের খুব কাছাকাছি বা খুব দূরে রাখবেন না।

মাউস নড়ানো

মাউসটি আপনার প্রয়োজন অনুসারে দ্রুত বা ধীর গতিতে নড়ান। মাউসটি সোজা লাইনে নড়ান, বাঁকানো ভাবে নয়। অল্প দূরত্বে নড়ানোর জন্য আপনার কব্জি ব্যবহার করুন এবং বেশি দূরত্বে নড়ানোর জন্য আপনার বাহু ব্যবহার করুন।

ক্লিকিং

বাম বোতামটি নির্বাচন করতে এবং ডান বোতামটি মেনু খুলতে ব্যবহার করুন। ডাবল-ক্লিকিং দিয়ে ফাইল বা অ্যাপ্লিকেশন খুলুন। ট্রিপল-ক্লিকিং দিয়ে একটি শব্দ বা লাইন নির্বাচন করুন। ড্র্যাগিং করে ফাইল বা আইটেম সরান।

স্ক্রোলিং

স্ক্রোল হুইল ব্যবহার করে উপরে বা নিচে স্ক্রোল করুন। দ্রুত স্ক্রোল করার জন্য স্ক্রোল হুইল দ্রুত ঘুরান। ধীরে স্ক্রোল করার জন্য স্ক্রোল হুইল ধীর গতিতে ঘুরান।

অন্যান্য টিপস

একটি মানসম্মত মাউস প্যাড ব্যবহার করুন যা আপনার মাউসটি সহজে স্লাইড করতে দেয়। নিয়মিত আপনার মাউস পরিষ্কার করুন। আপনার মাউসের বোতামগুলির জন্য সঠিক সংবেদনশীলতা সেট করুন। আপনার প্রয়োজন অনুসারে মাউসের বোতামগুলির কাজ কাস্টমাইজ করুন।

এই নিয়মগুলি মেনে চললে আপনি আপনার মাউস ব্যবহারের দক্ষতা দ্রুত উন্নত করতে পারবেন এবং আপনার কম্পিউটার ব্যবহারের অভিজ্ঞতা আরও আনন্দদায়ক করে তুলতে পারবেন।

মাউস সম্পর্কে প্রশ্ন ও উত্তর:

প্রশ্ন: মাউস কি?

উত্তরঃ মাউস হলো একটি ইনপুট ডিভাইস যা কম্পিউটারের সাথে যোগাযোগ করার জন্য ব্যবহৃত হয়। এটি হাতে ধরে ব্যবহার করা হয় এবং একটি সমতল পৃষ্ঠের উপর ঘুরিয়ে স্ক্রিনের পয়েন্টার নিয়ন্ত্রণ করে।

প্রশ্নঃ মাউস কোন ধরনের ডিভাইস ?

উত্তর : কম্পিউটার মাউস হলো ইনপুট ডিভাইস ।

প্রশ্নঃ মাউস কি ডিভাইস?

উত্তর : মাউস হলো ইনপুট ডিভাইস ।

প্রশ্নঃ মাউসের কয়টি অংশ ?

উত্তর : মাউসের তিনটি অংশ right button, left button, wheel button ।

প্রশ্নঃ মাউস কোন প্রজন্মের আবিষ্কার?

উত্তর : মাউস দ্বিতীয় প্রজন্মের আবিষ্কার।

প্রশ্নঃমাউস ইনপুট নাকি আউটপুট?

উত্তর :  মাউস ইনপুট ডিভাইস।

প্রশ্নঃ  মাউস কি আউটপুট ডিভাইস ?

উত্তর :  না, মাউস একটি ইনপুট ডিভাইস।

প্রশ্নঃ তারবিহীন মাউস কে কি বলে ?

উত্তর : তারবিহীন মাউস কে wireless mouse বলে।

মাউস কি। মাউস কি ধরনের ডিভাইস- শেষ কথা

বন্ধুরা আজকের পোস্টে আমি আপনাদেরকে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মাউস কি, মাউস কত প্রকার ও কি কি, মাউস কি ধরনের ডিভাইস, মাউস কে আবিস্কার করেন, মাউসের কাজ কি, মাউস কিভাবে কাজ করে ইত্যাদি মাউস ‍সম্পর্কে সকল  ধরনের তথ্য দেওয়ার চেষ্টা করেছি। আশা করি মাউস সম্পর্কে যাবতীয় তথ্যাদি আমাদের আজকের পোষ্টে পেয়ে যাবেন। আমাদের এই ওয়েবসাইটে বিভিন্ন ধরনের তথ্যমূলক ‍আর্টিকেল প্রকাশ করা হয়ে থাকে নিয়মিত। আপনারা যারা এই ধরনের আর্টিকেল নিয়মিত পড়তে চান তারা আমাদের এই ওয়েবসাইটটি ফলো করতে পারেন। আশাকরি বিভিন্ন ইনফরমেটিভ বা তথ্যমূলক আর্টিকেল পড়তে পারবেন প্রতিনিয়ত। এতক্ষণ সাথে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ।।

আরও পড়ুন:

পেনড্রাইভ কি? পেনড্রাইভ কত প্রকার ও কি কি
প্রিন্টার কি? প্রিন্টার কত প্রকার ও কি কি
মনিটর কি? মনিটর এর কাজ কি
কম্পিউটারের মূল অংশ কয়টি ও কি কি?

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন:

Leave a Comment