তাহিয়াতুল মসজিদ নামাজের নিয়ত

তাহিয়াতুল মসজিদ নামাজের নিয়ত-তাহিয়্যাহ অর্থ হচ্ছে ‘উপঢৌকন বা তোহফা’। দুখুলু বা দাখিল অর্থ হচ্ছে ‘প্রবেশ করা’।অর্থাৎ তাহিয়্যাতুল মসজিদ বা দুখুলুল মসজিদ নামাজ বলতে বুঝায় মসজিদে প্রবেশ করলেই মসজিদের আদব স্বরূপ ২ রাকাত নামাজ বা সালাত আদায় করা।

তাহিয়াতুল মসজিদ নামাজের নিয়ত, তাহিয়াতুল মসজিদ নামাজের নিয়ম, তাহিয়াতুল মসজিদ নামাজ;

তাহিয়াতুল মসজিদ নামাজের নিয়ত

আমরা অনেকেই নামাজের নির্ধারিত সময়ের আগে মসজিদে গিয়ে পরচর্চা করে সময় নষ্ট করি, আবার অনেকে বসে জামাতের জন্য অপেক্ষা করি। তাহিয়্যাতুল মসজিদ বা দুখুলুল মসজিদ সালাত এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ নামাজ কিন্তু অধিকাংশ মুসলমান এই নামাজ সম্পর্কে জানেন না।

মসজিদে প্রবেশের পর সরাসরি না বসে দুই রাকাত তাহিয়্যাতুল মসজিদ বা দুখুলুল মসজিদ নামাজ পড়তে হবে। তারপর জামাতের নামাজ পড়ার জন্য অপেক্ষা করতে হবে। যখনি আমরা মসজিদে প্রবেশ করব তখনি ২ রাকাত তাহিয়্যাতুল মসজিদ বা দুখুলুল মসজিদ নামাজ আদায় করব ইনশাল্লাহ।

হজরত আবু কাতাদা (রাঃ) হতে বর্ণিত, হজরত মুহাম্মদ  (সাঃ) বলেছেন , তোমাদের মধ্যে যখন কোন ব্যক্তি মসজিদে প্রবেশ করবে তখন বসার পূর্বেই দুই রাকাত নফল নামাজ পড়বে (বুখারী শরীফ)।

অনেকে মনে করেন যে, মাসজিদে প্রবেশ করে প্রথমে একটু বসে তারপর উঠে দুই রাকাত নামাজ পড়তে হয়। কিন্তু তাদের এই ধারণা আসলে ঠিক নয়। নিয়ম হলো মসজিদে প্রবেশ করে বসার পূর্বেই এই সালাত আদায় করা। এর ফলে সাওয়াবও বেশী হয়। তবে কিছুক্ষণ বসার পরেও এই নামাজ পড়া যায়, কিন্তু এই নিয়মে নামাজ পড়লে সাওয়াব কম হয়।

যদি কোন ব্যক্তি মাসজিদে প্রবেশ করে দেখে যে, সময় বেশী নেই জামায়াত শুরু হয়ে যাবে। “তাহিয়্যাতুল মসজিদ” পড়তে গেলে সুন্নাতে মুয়াক্কাদা পড়া যাবে না কিংবা ফরয নামাজ ছুটে যাবে, তাহলে সে তখন “তাহিয়্যাতুল মসজিদ” পড়বে না।

বরং সুন্নাত বা ফরজ নামাজ আদায় করবে এবং সুন্নাত বা ফরয নামাজের মধ্যেই “তাহিয়্যাতুল মসজিদ” – এর নিয়ত করবে। ইনশাআল্লাহ, এর দ্বারা সুন্নাত এবং ফরয আদায়ের সাথে সাথে “তাহিয়্যাতুল মসজিদ” এর সাওয়াবও লাভ হবে।

ওযু করার পর মাসজিদে প্রবেশ করে দুই রাকাআত নফল নামজ আদায় করার দ্বারা তাহিয়্যাতুল ওযু ও দুখুলুল মসজিদ উভয়টি এক সাথে আদায় হয়ে যাবে।

তাহিয়্যাতুল নামাজের নিয়ম 

সাধারণ সুন্নাত ও নফল নামাজের মতো করে যে কোন সূরা-কিরাত দ্বারা ‘ তাহিয়্যাতুল মাসজিদ’-এর নামাজ আদায় করা হয়। উভয় রাকাআতেই সূরা ফাতিহার পর অন্য যে কোন সূরা মিলিয়ে পড়তে হবে এবং আখেরী বৈঠকে আত্তাহিয়্যাতু, দরুদ শরীফ ও দোয়ায়ে মাছূরা পড়ে সালাম ফিরাতে হবে।

তাহিয়াতুল মসজিদ নামাজের নিয়ত আরবি

نَوَيْتُ اَنْ اُصَلِّىَ لِلّٰهِ تَعَالٰى رَكْعَتَىْ صَلٰوةِ تَحْيَةُ الْمَسْجِدِ سُنَّةُ رَسُوْلِ اللّٰهِ تَعَالٰى مُتَوَ جِّهًا اِلٰى جِهَةِ الْكَعْبَةِ الشَّرِ يْفَةِ : اَللّٰهُ اَكْبَرُ

তাহিয়াতুল মসজিদ নামাজের বাংলা নিয়ত

আল্লাহর ওয়াস্তে কিবলামুখী হয়ে দুই রাকা’আত তাহিয়্যাতুল মসজিদের সুন্নাত নামায আদায় করছি, আল্লহু আকবার।

আরও পড়ুনঃ তাহিয়্যাতুল ওযুর নামাজের নিয়ত

তাহিয়্যাতুল মসজিদ না দুখুলুল মসজিদ নামাজের ফজিলত 

হজরত ওসমান (রাঃ) থেকে বর্ণিত ,হজরত মুহাম্মদ (সাঃ) বলেছেন ,যে ব্যক্তি মসজিদে প্রবেশ করে দুই রাকাত নফল নামাজ পড়বে এক নামাজ থেকে অন্য নামাজ পর্যন্ত আল্লাহ তায়ালা তার ‍সকল সগীরা গুনাহ ক্ষমা করে দেবেন। (মুসলিম শরীফ)

তাহিয়াতুল মসজিদ নামাজের নিয়ত নিয়ে শেষ কথা

তাহিয়াতুল মসজিদ একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। ‍আজকের পোষ্টে ‍আমরা জানলাম তাহিয়াতুল মসজিদ নামাজের নিয়ম কি, কিভাবে এই নামাজ পড়তে হয়। তাছাড়া এই নামাজের নিয়ত ও ফজিলত সম্পর্কেও জানলাম। আশাকরি ‍আজকের পোষ্ট থেকে তাহিয়াতুল মসজিদ বা দুখুলুল মসজিদ নামাজ ‍সম্পর্কে বিস্তারিত ধারনা পেয়েছেন। আল্লাহ আমাদের সবাইকে এই গুরুত্বপূর্ণ আমলটি ‍সঠিকভাবে পালন করার তৌফিক দান করুন। আমিন।।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন:

Leave a Comment