ডাটা এন্ট্রি কি এবং ডাটা এন্ট্রি করে কত টাকা আয় করা যায় এ বিষয়ে অনেকেই জানার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করে থাকেন। আপনি যদি অনলাইন থেকে টাকা উপার্জন করতে চান, তবে ডাটা এন্ট্রি করে টাকা আয় করা যায়, শুনে থাকবেন। আপনি যদি কম্পিউটারে টাইপিং এ দক্ষ হয়ে থাকেন, তাহলে ডাটা এন্ট্রি করে প্রতি মাসে অনেক টাকা উপার্জন করতে পারবেন। কত টাকা আয় করা যায় এবং কীভাবে টাকা ইনকাম করা শুরু করবেন এ বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো এই পোস্টে।
আপনি যদি অনলাইন থেকে টাকা উপার্জন করার জন্য আগ্রহী হয়ে থাকেন এবং সেই উপার্জন করতে চান ডাটা এন্ট্রি করে, তবে এই পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়ুন। আজকের এই পোস্টে ডাটা এন্ট্রি সম্পর্কে বিস্তারিত সকল তথ্য জানতে পারবেন। তো চলুন, শুরু করা যাক।
ডাটা এন্ট্রি কি?

ডাটা মানে হচ্ছে তথ্য। এন্ট্রি মানে হচ্ছে প্রবেশ করানো। কম্পিউটারে বিভিন্ন ধরণের তথ্য সংগ্রহ করা হয়ে থাকে। এসব ডাটা কম্পিউটারে বিভিন্ন ভাবে প্রবেশ করানো হয়ে থাকে। ডাটা এন্ট্রি করে এমন অনেক তথ্য সংগ্রহ করা হয়। এটাই হচ্ছে ডাটা এন্ট্রি। অর্থাৎ, কম্পিউটারে বিভিন্ন ধরণের তথ্য সংগ্রহ করার মাধ্যমকেই ডাটা এন্ট্রি বলা হয়। যেসব বিষয়ে ডাটা এন্ট্রি করা হয়ে থাকে এগুলো হচ্ছে-
Also Read
- নাম এবং ঠিকানা
- ফোন নম্বর
- ইমেল ঠিকানা
- ক্রেডিট কার্ড তথ্য
- পরিমাণ বিক্রয়
- উৎপাদন ডেটা
- গ্রাহক পরিষেবা রিপোর্ট
ডাটা এন্ট্রি অপারেটরদের অবশ্যই দ্রুত এবং সঠিকভাবে টাইপ করতে সক্ষম হতে হবে। তাদের অবশ্যই কম্পিউটার প্রোগ্রাম এবং সফ্টওয়্যারের সাথে পরিচিত হতে হবে। অবশ্যই ধৈর্যশীল এবং মনোযোগী হতে হবে। ডাটা এন্ট্রি শিখে যেকোনো চাকরি করা যায়। ডাটা এন্ট্রি শিখে পার্ট টাইম বা ফুল টাইম চাকরিতে জয়েন করা যেতে পারে। ডাটা এন্ট্রি যারা করে, তারা সাধারণত অনেক ভালো বেতন পেয়ে থাকেন। অনেকেই ডাটা এন্ট্রি শিখে ফ্রিল্যান্সিং করে থাকে।
আরও পড়ুন – রিয়েল টাকা ইনকাম করার সেরা কয়েকটি উপায়
ডাটা এন্ট্রি অপারেটর হওয়ার জন্য কোনও নির্দিষ্ট শিক্ষাগত যোগ্যতা প্রয়োজন হয় না। তবে, অনেক কোম্পানি উচ্চ বিদ্যালয় ডিপ্লোমা বা সমমানের যোগ্যতা সম্পন্ন প্রার্থীদের পছন্দ করে। কিছু কোম্পানি ডাটা এন্ট্রি প্রশিক্ষণ প্রদান করে। আপনি যদি ফ্রিল্যান্সিং করে টাকা আয় করতে চান, তবে ডাটা এন্ট্রি হতে পারে আপনার ফ্রিল্যান্সিং যাত্রার শুরু।
ডাটা এন্ট্রি করে টাকা ইনকাম করার উপায়

সবকিছু এখন অনলাইন ভিত্তিক হয়ে গেছে। তাই, মানুষ তাদের ব্যক্তিগত জীবনের তথ্য বা ব্যবসায়িক তথ্য, সব কিছুই অনলাইনে সংরক্ষণ করছে। সকল তথ্য এক জায়গায় জমা করে তা নির্দিষ্ট ডাটাবেজে জমা করার কাজই হচ্ছে ডাটা এন্ট্রি। ফ্রিল্যান্সিং এর একটি সেক্টর হচ্ছে ডাটা এন্ট্রি। আপনি যদি মার্কেটপ্লেস ভিজিট করেন, তবে দেখতে পাবেন, অনেকেই শুধু ডাটা এন্ট্রির কাজ করেই প্রতি মাসে অনেক ভালো পরিমাণে টাকা ইনকাম করছে।
কিন্তু, আপনি যদি ডাটা এন্ট্রির কাজ করতে চান, আপনার টাইপিং স্পীড ফাস্ট হতে হবে। এরপর, আপনার একটি কম্পিউটার কিংবা ল্যাপটপ লাগবে। সাথে থাকতে হবে ইন্টারনেট কানেকশন। এছাড়া, আপনাকে ডাটা এন্ট্রি সম্পর্কিত সকল সফটওয়্যার সম্পর্কে ধারণা রাখতে হবে। যেমন: মাইক্রোসফট ওয়ার্ড ও মাইক্রোসফট এক্সেল। এছাড়া, অনলাইন থেকে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করে সেগুলো সংরক্ষণ করতে হবে। তাহলেই আপনি ডাটা এন্ট্রির কাজ করে অনলাইন মার্কেটপ্লেস থেকে টাকা ইনকাম করতে পারবেন।
ডাটা এন্ট্রি করে টাকা ইনকাম করার সাইট
ডাটা এন্ট্রি করে টাকা ইনকাম করতে চাইলে আপনাকে অনলাইন মার্কেটপ্লেসে কাজ করতে হবে। ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরের যেকোনো কাজ করতে গেলে আমাদেরকে অনলাইন মার্কেটপ্লেসে কাজ করতে হয়। ডাটা এন্ট্রি যেহেতু একটি ফ্রিল্যান্সিং কাজ, তাই আমাদেরকে অনলাইন মার্কেটপ্লেসে কাজ করতে হবে। নিচে আমি কিছু অনলাইন মার্কেটপ্লেসের তালিকা দিয়েছি, এগুলো থেকে আপনি ডাটা এন্ট্রি করে টাকা ইনকাম করতে পারবেন।
- রেভ – Rev
- আপওয়ার্ক – Upwork
- ফ্রিল্যান্সার – Freelancer
- ফাইভার – Fiverr
- পিপল পার আওয়ার
- ফ্লেক্সজবস – Flexjobs
- ক্লিকওয়ার্কার – Clickworker
- মেগাটাইপারস – MegaTypers
- স্ক্রিবি – Scribie
উপরোক্ত অনলাইন মার্কেটপ্লেস ওয়েবসাইটগুলো থেকে আপনি ডাটা এন্ট্রির কাজ করে টাকা আয় করতে পারবেন। ডাটা এন্ট্রি করে ইনকাম কিংবা যেকোনো সেক্টরে ফ্রিল্যান্সিং করে ইনকাম করতে চাইলে আপনি উপরোক্ত তালিকা থেকে আপওয়ার্ক – Upwork, ফাইভার – Fiverr, ফ্রিল্যান্সার – Freelancer, পিপল পার আওয়ার, ক্লিকওয়ার্কার – Clickworker ইত্যাদি ওয়েবসাইটে আপনার প্রোফাইল তৈরি করে গিগ খুলে কাজ করতে পারেন। এগুলো ফ্রিল্যান্সিং এর জন্য সবথেকে জনপ্রিয় মার্কেটপ্লেস।
আরও পড়ুন – মাসে লাখ টাকা আয় করার উপায়
আপনি যদি ডাটা এন্ট্রির কাজ পারেন, তবে রেভ – Rev থেকেও কাজ করতে পারেন। এই ওয়েবসাইটে অনেক ডাটা এন্ট্রির কাজ পেয়ে যাবেন। কাজ পাওয়ার আগে আপনাকে আপনার কাজের সেম্পল দেখাতে হবে। এজন্য আপনাকে দিয়ে একটি টাস্ক কমপ্লিট করিয়ে নিতে পারে।
ডাটা এন্ট্রি করে টাকা ইনকাম করতে চাইলে আপনাকে বিভিন্নভাবে ডাটা কালেক্ট করে সেগুলো সংরক্ষণ করতে হতে পারে। ডাটা এন্ট্রি করার কিছু কাজ হচ্ছে : ক্যাপচা দেখে লিখা, অনলাইন থেকে তথ্য সংগ্রহ, ফরম পূরণ, ডাটা এডিটিং ও ফরম্যাটিং, অডিও ফাইল শুনে লিখা, ইত্যাদি।
ডাটা এন্ট্রি করে কত টাকা আয় করা যায়
ডাটা এন্ট্রি করে কত টাকা আয় করা যায় এ বিষয়ে অনেকেই প্রশ্ন করে থাকেন। আপনিও নিশ্চয়ই জানতে চান, ডাটা এন্ট্রি করে কত টাকা আয় করা যায়। অনলাইনে ইনকাম করার পদ্ধতিগুলো জানার পর অনেকেই ডাটা এন্ট্রির দিকে আগ্রহী হয়ে থাকে। আপনিও যদি এমন ডাটা এন্ট্রির কাজ করে ক্যারিয়ার গড়তে চান, তবে ডাটা এন্ট্রি শিখতে পারেন।
ডাটা এন্ট্রি করে কত টাকা আয় করা যায় এটি মূলত সঠিকভাবে বলা সম্ভব না। কারণ, আপনি যদি এই কাজে দক্ষ হতে পারেন, তবে ফ্রিল্যান্সিং করে প্রতি মাসে লক্ষাধিক টাকা অব্দি ইনকাম করতে পারবেন। কিংবা, আপনি চাইলে এই কাজ শিখেই যেকোনো সরকারী কিংবা বেসরকারী চাকরিতে জয়েন করতে পারবেন। ডাটা এন্ট্রি কি তা তো এতক্ষণে জেনে গেছেন। আপনি যদি কম্পিউটার ব্যবহার করে অনেক দ্রুত টাইপিং এবং বিভিন্ন তথ্য ও উপাত্ত সংরক্ষণ করতে পারেন, তবে যেকোনো চাকরিতে জয়েন করতে পারবেন।
অনেক কোম্পানি থেকে কম্পিউটার অপারেটর নিয়োগ দিয়ে থাকে। আপনি চাইলে এসব চাকরিতে জয়েন করতে পারেন। এক্ষেত্রে, আপনার টাইপিং স্পিড, বিভিন্ন অফিস এপ্লিকেশন এর উপর আপনার দক্ষতা আপনার চাকরিতে জয়েন করার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করবে।
আমাদের শেষ কথা
আজকের এই পোস্টে আপনাদের সাথে ডাটা এন্ট্রি করে কত টাকা আয় করা যায় এ বিষয়ে আলোচনা করেছি। এছাড়াও, অনেকেই ডাটা এন্ট্রি সম্পর্কে তেমন জানেন না। আশা করছি, এই পোস্ট থেকে আপনি ডাটা এন্ট্রি কি এবং কত টাকা আয় করা যায় জানতে পেরেছেন। এমন আরও তথ্যবহুল ব্লগ পড়তে এই ওয়েবসাইট ভিজিট করুন।