কম্পিউটার কিবোর্ড পরিচিতি- কোন বাটনের কি কাজ (কিবোর্ডের এ টু জেড তথ্য)

কম্পিউটার কিবোর্ড – কম্পিউটারের প্রধান ইনপুট ডিভাইসগুলোর মধ্যে কিবোর্ড অন্যতম। কিবোর্ডে মূলত অনেক ধরনের সাইন বা সংকেত থাকে যা কম্পিউটার ব্যবহারকারীরা প্রাথমিক পর্যায়ে তেমন জানে না। কিবোর্ড হলো এমন একটি ডিভাইস যা কম্পিউটার টাইপ রাইটারের ধারণা থেকে আসা একটি ইনপুট ডিভাইস যার মধ্য কিছু ফাংশন যুক্ত বাটন বিন্যস্ত থাকে এবং সেই বাটনগুলো মেকানিক্যাল লিভার অথবা ইলেকট্রিক সুইচ এর মতো কাজ করে।

কম্পিউটারের কিবোর্ড ডিভাইস থেকে কোন অর্থপূর্ণ সাইন বা চিহ্ন তৈরি করতে হলে কিবোর্ড হতে এক বা একাধিক কি চাপতে হয়। কম্পিউটারে কিবোর্ড ব্যবহারের উপযোগিতা অনেক বেশি তার প্রমাণ বর্তমানে মাউস, পেন, ভয়েস টাচ স্ক্রিন, আবিষ্কার হওয়ার পরেও কম্পিউটার কিবোর্ড এর ভূমিকা তাদের চেয়ে অনেক বেশি।

যারা নতুন কম্পিউটার ব্যবহারকারী বা যাদের কম্পিউটার সম্পর্কে ধারণা কম তাদের অনেকেই কিবোর্ড সম্পর্কে জানতে গুগলে সার্চ করেন। আমাদের আজকের আর্টিকেলে আমরা কম্পিউটারের কিবোর্ড সম্পর্কে এ টু জেড তথ্য আপনাদের দেওয়ার চেষ্টা করব যাতে আপনারা কম্পিউটার কিবোর্ড সম্পর্কে যথাযথ ধারণা লাভ করতে পারেন।কম্পিউটারের কিবোর্ড এর পরিচিতি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হলে আজকের আর্টিকেলে শেষ পর্যন্ত আমাদের সাথে থাকবেন।

কম্পিউটার কিবোর্ড পরিচিতি

কম্পিউটারের কিবোর্ড পরিচিতি

কম্পিউটার কিবোর্ড হলো কম্পিউটারের প্রধান ইনপুট ডিভাইস। কীবোর্ডের মধ্য ফাংশন অনুযায়ী বিভিন্ন ধরনের কি সারিবদ্ধভাবে সাজানো থাকে। এই কিগুলোর রয়েছে আলাদা আলাদা পরিচিতি। সকল কিবোর্ডের কি এর সংখ্যা এক রকম নয়। কম্পিউটারের কিবোর্ড ব্যবহারের ক্ষেত্রে মূল কি ব্যতীত বিভিন্ন কম্পিউটারের কি গুলোর সংখ্যা কম্পিউটারের কোম্পানি অনুযায়ী ভিন্নতর হয়ে থাকে। তবে কম্পিউটার কিবোর্ডের মূল কি এর সংখ্যা হচ্ছে ৮৪ টি। ৮৪ কি এর নিচে কোন কম্পিউটারে কিবোর্ড হয় না। ৮৪টি মূল কিসহ কোম্পানি অনুযায়ী ১০১ অথবা ১০২ টি কিও থাকে অনেক কম্পিউটারে।

কিবোর্ডের প্রকারভেদ

কম্পিউটারের কিবোর্ড এর ব্যবহারের উপর ভিত্তি করে কম্পিউটার কিবোর্ড কে সাধারণত ৫ ভাগে ভাগ করা হয়। যথা:

১) function কি।

২) অ্যারো কি বা এডিট কি।

৩) আলফাবিক কি অথবা আলফা নিউমেরিক কি ।

৪) নিউমেরিক কি বা লজিক্যাল কি ।

৫) বিশেষ কি বা কমান্ড কি।

Function কি

ফাংশন কি হলো যে কোনো কম্পিউটারের কিবোর্ডের উপরের দিকে বাম পাশ থেকে সারিবদ্ধভাবে F1 থেকে F12 পর্যন্ত যে কি গুলো থাকে সেই কিগুলোকেই বলা হয় ফাংশন কি। ফাংশন কি গুলোর মাধ্যমে কম্পিউটারের নির্দিষ্ট কিছু ফাংশনাল কাজ করা যায়। যেমন কোন প্রোগ্রামের জন্য হেল্প অথবা কোন প্রোগ্রাম রান করানো ইত্যাদি।

অ্যারো কি বা এডিট কি

কম্পিউটারের কিবোর্ড এর ডানদিকে নিচে যে পৃথকভাবে চারটি কি দেওয়া থাকে সেই কি গুলোকে অ্যারো কি বা এডিট কি বলে। তবে কিছু কিছু কম্পিউটারের কিবোর্ডে অ্যারো কি বা এডিট কি গুলো উপরের দিকেও দেওয়া থাকে। কি গুলোর উপরে অ্যারো চিহ্ন দেওয়া থাকে যা দিয়ে খুব সহজে কারসরকে ডানে বামে উপরে এবং নিচে সরানো যায়। এই কি গুলোকে অ্যারো কি বা এডিট কি বলার কারণ হলো টেক্সট ইডিট করার কাজেও এটি ব্যবহার করা হয়।

আলফাবেট কি

কম্পিউটারের কিবোর্ডের যে অংশে ইংরেজি বর্ণমালা A-Z পর্যন্ত মোট ২৬ টি কি সাজানো থাকে সেই অংশকে বলা হয় আলফাবেট সেকশন কি।

নিউমেরিক কি বা লজিক্যাল কি

কম্পিউটারে কি বোর্ড এর ডান দিকে ০ থেকে ৯ পর্যন্ত সংখ্যা লিখা যে কি গুলো থাকে সেই গুলোকে বলা হয় নিউমেরিক কি বা লজিক্যাল কি। কম্পিউটারের কীবোর্ড এর এই কি অংশগুলোতে +,-,*,/প্রভৃতি এ্যারিথমেটিক অপারেটর থাকে। এছাড়াও থাকে <,>,=এই লজিক্যাল অপারেটরগুলো।

বিশেষ কি বা কমান্ড কি

উপরে উল্লেখিত এই কি গুলো ব্যতীত কিবোর্ড এর অন্যান্য কি সমূহ কোন না কোন বিশেষ কাজে ব্যবহৃত হয় যাদেরকে বলা হয় বিশেষ কি বা কমান্ড কি। এই বিশেষ কিগুলোর মধ্য রয়েছে-

*ESC: কোন নির্দেশ বাতিল করতে ESC কি ব্যবহৃত হয়।

*Tab: স্ক্রিনে প্যারাগ্রাফ কলাম নম্বর অনুচ্ছেদ শুরুর স্থান ইত্যাদির প্রয়োজন অনুযায়ী প্রস্তুতদের জন্য এই কি টি ব্যবহৃত হয়।

*Caps lock: ইংরেজিতে ছোট এবং বড় হাতের লেখাগুলোর টাইপিং করার কাজে এই কি ব্যবহৃত হয়।

*Shift:যখন একই ওয়ার্ডের মধ্য বা ওয়ার্ডের শুরুতে বড় ও ছোট হাতের অক্ষর গুলোর টাইপ করতে হয় তখন এই কি ব্যবহার করতে হয়। German Bangladesh এই দুটি শব্দ লিখতে প্রথম অক্ষর শিফট কি চেপে ধরে এবং পরে অক্ষরগুলো শিফট কি ছেড়ে দিয়ে লিখতে হবে। আর বাংলা বর্ণমালা লিখতে গেলে অক্ষর বিন্যস্ত কি এর উপরের নিচে লেখা টাইপিং করার জন্য এই কি‌ টি ব্যবহৃত হবে। এছাড়াও শিফট কি এর সাথে ফাংশন কি চেপে কম্পিউটার কে বিভিন্ন কমান্ড দেওয়া যায়।

*Ctrl: এই কি এর সাথে বিশেষ কি একত্রে চেপে কম্পিউটারকে কমেন্ট দেওয়া হয়। ব্যবহারকারীর সুবিধার জন্য কিবোর্ডের ডানে ও বামে এই কি দুটি থাকে।

*Alt:কম্পিউটারের বিভিন্ন প্রোগ্রামে বিভিন্ন ধরনের নির্দেশ প্রদানের জন্য এই কি ভিন্ন ভিন্ন ভাবে ব্যবহৃত হয় এবং বিভিন্ন কমান্ড এই কি এর সাহায্যে তৈরি করা যায়।

*Enter: কম্পিউটারকে কোন নির্দেশ দিয়ে সেই নির্দেশ কার্যকারণ করতে এই কি ব্যবহৃত হয়। টাইপিং এর ক্ষেত্রে নতুন প্যারা তৈরি করতেও এই কি ব্যবহার করা হয়।

*Pause break: কম্পিউটারে কোন লেখা পড়তে গেলে যদি দ্রুতগতির জন্য তা পড়তে সমস্যা হয় তাহলে এই কি চেপে তা পড়া যায়।

*Print screen: কম্পিউটারের পর্দায় যা কিছু দৃশ্যমান থাকে তা সব প্রিন্ট করতে চাইলে এই কি ব্যবহার করা হয়।

*Delete: কোন বাক্য অর্থ বা লেখাকে কম্পিউটার থেকে মুছে ফেলতে চাইলে এই কি ব্যবহার করা হয়।

*Home: এই কি টি ব্যবহার করে কার্সকে পাতার প্রথমে আনা হয়। তবে এম এস ওয়ার্ডে কোন ডকুমেন্ট লিখার সময়ে কারসোর প্রথম পাতায় আনতে হলে ctrl+home কি একসাথে টিপতে হবে।

*End: এই কি চাপলে কার্সর বা পয়েন্টার কম্পিউটারের যেখানেই থাকুক না কেন টেক্সট বা পেইজের শেষে চলে আসবে।

*Page up: এই কি ব্যবহার করে কার্সরকে উপরের দিকে ওঠানো হয়।

*Page Down: এই কি ব্যবহার করে কার্সকে কে নিচের দিকে নামানো হয়।

*Insert: কোন লেখার মাঝে কোন কিছু এক্সট্রা লিখতে চাইলে তা সাধারণত লেখার ডানদিকে লিখা হয়। কিন্তু এই কি চেপে লিখলে তা পূর্ববর্তী বর্ণের উপরে ওভার রাইটিং হয়। কাজ শেষে আবার এই কি চাপলে তা পূর্বের অবস্থায় ফিরে যায়।

* back space: যেকোনো লেখার পেছনের অংশ মুছে ফেলতে এই কি ব্যবহার করা হয়।

*Space bar:কিবোর্ডের কি গুলোর মধ্যে এই কীটটি সবচেয়ে লম্বা কোন বাক্য লেখার সময় শব্দ গুলোর মাঝে ফাঁকা করার জন্য এই কি ব্যবহার করা হয়।

*Num lock: এই কি চাপলে ডানদিকের কি গুলো চালু হয়।

কিবোর্ডের মাল্টিমিডিয়া কি

কম্পিউটারের কিবোর্ড এ মাল্টিমিডিয়া কি হিসেবে আরও ৪ টি কি থাকে। যথা:

*Stand by mode key: এই কি চেপে রাখলে কম্পিউটার চালু থাকবে কিন্তু কম্পিউটারের ‌মনিটর বন্ধ হয়ে যাবে।

*Mail key: এই কি চেপে আউটলুক এক্সপ্রেস চালু হবে এবং তা দিয়ে মেইল পাঠানো যাবে। তবে ইন্টারনেট চালু থাকা আবশ্যক।

*Web key: এই কি ব্যবহার করে সরাসরি ওয়েব ব্রাউজার ওপেন করা যাবে এবং ইন্টারনেট ব্রাউজ করা যাবে।

*Start menu key: এই কি চেপেস্ট কার্ড মেনু ওপেন করা যায় এবং প্রয়োজনীয় কমান্ড করা যায়।

কম্পিউটার কিবোর্ড এর কোন বাটন এর কাজ কি

কম্পিউটার কিবোর্ডে কয়েকটি বাটন রয়েছে যাদের কাজ সম্পর্কে নতুনরা বুঝতে পারে না। কম্পিউটারের কোন বাটনের কি কাজ জেনে নিন:

*Control alter: কোন বিশেষ নির্দেশ প্রদান করার জন্য curl এবং Alt key দুটি সহায়ক key ctrl হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

*Escape key:এই কি বাটনটির সাহায্যে কম্পিউটারের যেকোনো কাজ বর্তমানে চলছে সেটা থামানো বা বন্ধ করা যাবে।

*Caps lock key: ইংরেজি ক্যাপিটাল লেটারের লিখার জন্য এই বাটনটি ব্যবহার করা হয়।

কম্পিউটারের কি বোর্ড FAQ

কম্পিউটারের প্রধান ইনপুট ডিভাইস কোনটি?

উত্তর: কিবোর্ড।

কম্পিউটারের মাল্টিমিডিয়া কিবোর্ডে কয়টি কি থাকে?

উত্তর: কম্পিউটারের মাল্টিমিডিয়া কিবোর্ড  ৪ টি কি থাকে।

ব্যবহারের উপর ভিত্তি করে কম্পিউটারের কিবোর্ডকে কয়টি ভাগে ভাগ করা হয়?

উত্তর: ব্যবহারের উপর ভিত্তি করে কম্পিউটারের কি বোর্ডকে ৫টি ভাগে ভাগ করা হয়।

কীবোর্ড আবিষ্কার করেন কে ?

উত্তর : Christopher Latham Sholes

কী বোর্ডের কী কয়টি ? 

উত্তর : কোন কিবোর্ডে 84 টি আবার কোন কিবোর্ডে 101 – 102 টি key থাকে।

কীবোর্ড কি ধরনের ডিভাইস ?

উত্তর : ইনপুট ডিভাইস।

কিবোর্ড এর দাম কত ?

উত্তর : কীবোর্ডে এর দাম শুরু হয় 150 টাকা থেকে ।  তবে 1500 টাকার মধ্যে আপনারা ভালো কিবোর্ড পেয়ে যাবেন। 

কম্পিউটার কি বোর্ড সম্পর্কে শেষ কথা

কম্পিউটারের কিবোর্ড গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কম্পিউটারের দ্বারা যেকোনো টাইপিং করতে গেলে কম্পিউটারের কিবোর্ড সম্পর্কে ভালো ধারণা থাকতে হয় নতুবা কম্পিউটার টাইপিং করার ক্ষেত্রে ঝামেলার সম্মুখীন হতে হয়।

আর যে কোন কাজের ওপর যদি দক্ষতা বা অভিজ্ঞতা না থাকে সেই কাজ করতে গেলে ঝামেলা হওয়াটাই স্বাভাবিক। আমাদের আজকের আর্টিকেলটি আলোচিত হয়েছে কম্পিউটার কিবোর্ড এর কোন কি দ্বারা কোন কাজ করা হয় অথবা কোন কি এর সাহায্যে টাইপিং এর কোন বিষয়টি নির্দেশ করানো হয়। আশা করব আপনারা শেষ পর্যন্ত আর্টিকেলটি পড়ে এই সম্পর্কে বিস্তারিত  জেনেছেন।

পোস্ট ট্যাগ–

কিবোর্ড পরিচিতি pdf,কীবোর্ড এর কয়টি অংশ,কম্পিউটার কীবোর্ড এর ব্যবহার,কম্পিউটার কিবোর্ড দাম,কীবোর্ড এর কোন বাটনের কি কাজ,কম্পিউটার কিবোর্ড শর্টকাট,কম্পিউটার কিবোর্ড টাইপিং

আরও পড়ুন-

MS Word কি? Ms Word এর কাজ কি?

Ms Excel কি? এম এস এক্সেল এর কাজ কি?

Best Free Antivirus for windows

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন:

Leave a Comment