ইনশাআল্লাহ অর্থ কি এবং ইনশাআল্লাহ কখন বলতে হয় এ বিষয় নিয়ে আজকের এই পোস্টে আপনাদের সাথে আলোচনা করবো। ইনাশাআল্লাহ শব্দের অর্থ অনেকেই জানেন না। আবার, অনেকেই জানেন না যে, ইনশাআল্লাহ কখন বলা উচিত। এই ব্লগ পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়লে ইনাশাআল্লাহ মানে কী এবং কখন বলতে হবে এ বিষয়ে জানতে পারবেন।
আমরা অনেক সময় মাশাআল্লাহ, সুবহানআল্লাহ্, আলহামদুলিল্লাহ, ইনশাআল্লাহ ইত্যাদি শব্দ বলি। কিন্তু, অনেকেই জানি না যে, এই শব্দগুলোর আসল অর্থ কি। কেন এই শব্দগুলো ব্যবহার করা হয়ে থাকে। একটি উদ্দেশ্য আমাদের সকলেরই জানা আছে, তা হচ্ছে আল্লাহ্কে রাজি-খুশি করার জন্য এবং সাওয়াব অর্জন করার জন্য।
কিন্তু, এই শব্দগুলোর অর্থ অনেকেই জানি না। তো চলুন, এই পোস্টে বিস্তারিত আলোচনা করা যাক। ইনশাআল্লাহ অর্থ কি এবং ইনশাআল্লাহ কখন বলতে হয়।
Also Read
ইনশাআল্লাহ অর্থ কি

ইনশাআল্লাহ অর্থ হচ্ছে – আল্লাহ্ যদি চান বা আল্লাহ্র যদি ইচ্ছে হয়। কাউকে কোনো কথা দেয়ার সময়, কিংবা কেউ কিছু চাইলে ইনশাআল্লাহ বলা হয়ে থাকে। ইনশা আল্লাহ্ বলার মাধ্যমে এটা বোঝানো হয়ে থাকে যে, আল্লাহ্ যদি ইচ্ছে করেন বা আল্লাহ্ যদি চান, তবে।
আমাদের ভাগ্য পূর্বনির্ধারিত। আল্লাহ্ আমাদের ভাগ্যে যা রেখেছেন এবং আমাদের কর্মফল আমরা ভোগ করি। ভালো কাজ করতে গেলে আল্লাহ্র রহমত আমাদের সঙ্গে থাকে। খারাপ কাজে আল্লাহ্র রহমত থাকে না। কোনো ভালো কাজ করার উদ্যোগ নিলে বা কেউ কিনতে করতে বললে, ইচ্ছে পোষণ করার জন্য ইনশাআল্লাহ বলা হয়ে থাকে।
ইনশা আল্লাহ্ শব্দটি দ্বারা আল্লাহ্র ইচ্ছে এবং নিজের চাওয়া প্রকাশ করা হয়। মনে করুন, আপনি আমাকে বললেন আগামীকাল আপনার সাথে দেখা করতে। তখন আমি বলবো ইনশাআল্লাহ্। অর্থাৎ, আল্লাহ্র যদি ইচ্ছে হয় তবে নিশ্চয়ই আমি দেখা করবো। এতে যেমন আমাদের সম্মতি প্রকাশ পেয়েছে, তেমনি আল্লাহ্র উপরে বিশ্বাস প্রকাশিত হয়েছে।
ইনশাআল্লাহ শব্দের অর্থ কি
ইনশাআল্লাহ (আরবি: إِنْ شَاءَ ٱللَّٰهُ, ʾin šāʾa -llāh) একটি আরবি শব্দ যার বাংলা অর্থ “আল্লাহ যদি চান” বা “আল্লাহর ইচ্ছায়”। এটি ভবিষ্যতে ঘটার সম্ভাবনা সম্পর্কে কথা বলার সময় ব্যবহৃত হয়। মুসলমানরা বিশ্বাস করেন যে আল্লাহই সবকিছুর নিয়ন্ত্রক এবং তাঁর ইচ্ছার বাইরে কিছুই ঘটে না। তাই তারা যখন ভবিষ্যতে কিছু ঘটবে বলে আশা করে তখন তারা “ইনশাআল্লাহ” বলে আল্লাহর উপর নির্ভরতা প্রকাশ করে।
এটি মুসলমানদেরকে আল্লাহর উপর ভরসা করতে এবং তাঁর ইচ্ছার উপর নির্ভর করতে শেখায়। এটি তাদেরকে অহংকার থেকে দূরে রাখে এবং তাদেরকে সবসময় আল্লাহর কাছে ক্ষমা ও দয়া চাইতে উৎসাহিত করে।
ইনশাআল্লাহ শব্দের বাংলা অর্থ কি
ইনশাআল্লাহ একটি আরবি শব্দ। ইনশা আল্লাহ্ শব্দের বাংলা অর্থ হচ্ছে আল্লাহ্র যদি ইচ্ছে হয় বা আল্লাহ্ যদি চান। অর্থাৎ, আল্লাহ্র ইচ্ছে হলেই আমরা একটি কাজ সম্পন্ন করতে পারবো এবং আমাদের নিজের কাজটি করার সম্মতি প্রকাশ করার জন্য ইনশাআল্লাহ বলা হয়ে থাকে।
ইনশাআল্লাহ শব্দটি আরবি ভাষা থেকে এসেছে। এর অর্থ হলো “যদি আল্লাহ চান” বা “আল্লাহর ইচ্ছায়”। মুসলমানরা সাধারণত ভবিষ্যতে ঘটতে পারে এমন কোনও কিছুর কথা বলতে বা কোনও কাজের প্রতিশ্রুতি দিতে এই শব্দটি ব্যবহার করে। এটি একটি আশাবাদী শব্দ যা এই বিশ্বাসের প্রতিফলন করে যে আল্লাহ সবকিছুর উপর কর্তৃত্ব করেন এবং তিনিই সবকিছু ঘটান।
ইনশাল্লাহ নাকি ইনশাআল্লাহ

আল্লাহ কারও বোঝা তার সামর্থ্যের উপর চাপিয়ে দেন না। এর অর্থ হলো আল্লাহ আমাদেরকে এমন কোনও কাজ বা দায়িত্ব দেন না যা আমরা পালন করতে সক্ষম নই। যদি আমরা কোনও কাজ করতে চাই, তাহলে আমরা বলতে পারি “ইনশাআল্লাহ”, যার অর্থ হলো “যদি আল্লাহ চান”। এটি এই বিশ্বাসের প্রতিফলন করে যে আল্লাহ আমাদেরকে সেই কাজটি করতে সাহায্য করবেন যদি তিনি চান।
ইনশাআল্লাহ শব্দটি একটি আশাবাদী শব্দ যা আমাদেরকে এই বিশ্বাসের সাথে থাকতে সাহায্য করে যে আল্লাহ সবকিছুর উপর কর্তৃত্ব করেন এবং তিনিই সবকিছু ঘটান। যখন আমরা কোনও কাজের প্রতিশ্রুতি দিই তখন আমরা ইনশাআল্লাহ বলতে পারি, যা আমাদেরকে এই বিশ্বাসের সাথে থাকতে সাহায্য করে যে আমরা সেই কাজটি করতে সক্ষম হব যদি আল্লাহ চান।
ইনশাল্লাহ নাকি ইনশাআল্লাহ
ইনশাআল্লাহ শব্দটি দুটি ভাগে বিভক্ত: ইনশা এবং আল্লাহ। ইনশা একটি আরবি শব্দ যা “যদি” অর্থে ব্যবহৃত হয়। আল্লাহ আরবি শব্দ যা “আল্লাহ” অর্থে ব্যবহৃত হয়। তাই ইনশাআল্লাহ শব্দটি “আল্লাহ যদি চান” বা “আল্লাহর ইচ্ছায়” অর্থে ব্যবহৃত হয়।
ইনশাল্লাহ এবং ইনশাআল্লাহ শব্দের মাঝে ইনশাআল্লাহ শব্দটি সঠিক। বাংলায় উচ্চারণ করার সময় বা লেখার সময় ইন শা আল্লাহ্ ব্যবহার করতে পারেন। তবে, ইনশাল্লাহ বললে কিংবা ইংশাল্লাহ বললে ভুল হবে এবং জেনে শুনে বললে গুনাহ হবে।
তাই, ইন শা আল্লাহ্ বলুন। ভুল বানান থেকে বেঁচে থাকার জন্য আরবি বানান দেখতে পারেন। ইন শা আল্লাহ্ – إِنْ شَاءَ ٱللَّٰهُ বলার মাধ্যমে সাওয়াব অর্জন করতে পারবেন।
অনেকেই ইনশা আল্লাহ্ বলার সময় ইনশাই আল্লাহ্ বলে থাকেন। এটি সম্পূর্ণ ভুল এবং গোনাহের একটি কাজ। তাই, ইন শা আল্লাহ্ পড়ুন এবং আল্লাহ্র উপরে অগাধ বিশ্বাস রাখার চেষ্টা করুন।
ইনশাআল্লাহ বলার ফজিলত
ইনশাআল্লাহ বলার ফজিলত অনেক। এটি এমন একটি বাক্যাংশ যা ভবিষ্যতে ঘটবে বলে আশা করা এমন ঘটনার ক্ষেত্রে মুসলমানরা ইন শা আল্লাহ্ পরে থাকেন। এটি এই বিশ্বাসকে প্রকাশ করে যে, আল্লাহ ইচ্ছা না করলে কিছুই ঘটতে পারে না এবং তাঁর ইচ্ছা সমস্ত মানুষের ইচ্ছার উপর প্রাধান্য লাভ করে।
ইনশাআল্লাহ বলার ফজিলতগুলির মধ্যে রয়েছে:
- এটি আমাদেরকে আল্লাহর উপর ভরসা করতে এবং তাঁর ইচ্ছার উপর নির্ভর করতে সাহায্য করে।
- এটি আমাদেরকে অহংকার এবং আত্মবিশ্বাস থেকে দূরে রাখে।
- এটি আমাদেরকে ধৈর্যশীল এবং আশাবাদী হতে সাহায্য করে।
- এটি আমাদেরকে আল্লাহর কাছে ক্ষমা এবং রহমত প্রার্থনা করতে সাহায্য করে।
- এটি আমাদেরকে আল্লাহর সাথে সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করতে সাহায্য করে।
ইনশাআল্লাহ বলা একটি ছোট্ট বাক্যাংশ, কিন্তু এর ফজিলত অনেক। এটি আমাদেরকে একটি ভাল মুসলিম হতে এবং আল্লাহর কাছে পৌঁছানোর পথে সাহায্য করে।
আমাদের শেষ কথা
ফেরদাউস একাডেমির আজকের এই পোস্টে আপনাদের সাথে ইনশাআল্লাহ অর্থ কি এবং ইনশাআল্লাহ কখন বলতে হয় এ বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি। পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়ে থাকলে ইনশাআল্লাহ শব্দ কখন বলতে হবে এবং ইনশাআল্লাহ শব্দের উত্তরে কী বলতে হবে জানতে পেরেছেন। এমন আরও ইসলামিক পোস্ট পড়তে ইসলাম ও জীবন ক্যাটাগরি ভিজিট করতে পারেন।